বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ফাইনালে টান টান উত্তেজনাকর ও শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে ১ রানে হারিয়ে শিরোপা জয় করেছে ফরচুন বরিশাল। এর মাধ্যমে তৃতীয়বারের মতো বিপিএলের শিরোপা জয় করল কুমিল্লা।
এভাবেও ম্যাচ হারা যায়! ৪৩ বলে প্রয়োজন মাত্র ৪৫ রান, হাতে ৮ উইকেট। ক্রিজে সেট দুই ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল আর নুরুল হাসান সোহান। অথচ এই ম্যাচও কি-না হেরে বসলো তারকা দিয়ে ঠাসা ফরচুন বরিশাল। ম্যাচের সঙ্গে শিরোপাও হারালো সাকিব আল হাসানের দল। ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে মাত্র ১৫১ রানের পুঁজি। এরপর আবার ব্যাট হাতে সৈকত আলির তাণ্ডব। তবুও বরিশালকে ১৫০ রানে থামিয়ে ১ রানে জয় তুলে নিয়েছে কুমিল্লা।
এ ম্যাচ জয়ের ফলে বিপিএলের আট আসরে তৃতীয়বার শিরোপার স্বাদ পেল কুমিল্লা। ম্যাচের শেষ অংশটুকু বাদ দিলে পুরো ম্যাচই প্রভাব বিস্তার করে খেলেছে বরিশাল। তবে ওই যে প্রচলিত কথায় যে আছে, শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। শেষটাই তো ভালো করতে পারলো না ফরচুন বরিশাল। শেষ ১৮ বলে ১৮, শেষ ওভারে ১০ এবং শেষ বলে ৩ রানও যে করতে পারলো না তারা। দিন শেষে শিরোপার হাসি ইমরুল কায়েসের, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের।
এর আগে ২০১৫ ও ২০১৮ সালে শিরোপা জয় করেছিল কুমিল্লা।
ম্যাচটিতে প্রথমে ব্যাট করে পুরো ২০ ওভার খেলে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান করে কুমিল্লা। জবাবে বরিশাল ২০ ওভার খেলে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান করে।
১৫২ রান তাড়া করতে নেমে স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিল বরিশাল। তবে ১৬তম ওভারে নুরুল হাসান সোহান রান আউট, ১৭ম ওভারে ডোয়াইন ব্রাভো এলবিডব্লিউ আউট হলে ম্যাচটি কঠিন হয়ে যায়। এরপর ১৯তম ওভারে মোস্তাফিজের বলে শান্ত ১২ রান করে এলবিডব্লিউ হলে বরিশালের হাত থেকে ম্যাচটি ফঁসকেই যায়।
এর আগে কুমিল্লার দেওয়া এই রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় বরিশাল। দলীয় মাত্র ৫ রানের মাথায় ওপেনার মুনিম শাহরিয়ারের উইকেটটি হারায় তারা। শাহরিয়ার ৭ বল খেলে কোনো রান করার আগে শহিদুল ইসলামের বলে ক্যাচ আউট হন।
তবে এরপর দলের হাল ধরেন অপর ওপেনার ক্রিস গেইল ও ওয়ান ডাউনে নামা সৈকত আলী। তারা শুরুর ধাক্কা সামলে দলকে সুবিধাজনক স্থানে পৌঁছে দেন।
দলীয় ৭৯ রানের সময় সৈকত ৫৮ রান করে তানভীর ইসলামের বলে ক্যাচ আউট হন। তিনি মাত্র ৩৪ বল খেলে এই রান করেন।
তবে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল একদম দেখেশুনে খেলার দিকে নজর দেন। গেইল ৩১ বলে ৩৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এরপর সাকিব ৭ বলে ৭ রান করে আউট হন।
এর আগে মিরপুরের শেরে বাংলায় টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে কুমিল্লা। ম্যাচের শুরুতে সুনিল নারিনের ব্যাটিং তাণ্ডবে উড়ন্ত সূচনা পায় ভিক্টোরিয়ান্স। কিন্তু তিনি ২৩ বল খেলে ৫৭ রান করে আউট হওয়ার পর কুমিল্লার ব্যাটিংয়ে ধস নামে।
ম্যাচটিতে প্রথম তিন ওভারেই ৪০ রান তোলে কুমিল্লা। এরপর প্রথম ১০ ওভারে করে ৯৪ রান। কিন্তু ওপনার সুনীল নারিন দলকে যে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন সেটি ধরে রাখতে পারেননি পরে ব্যাট করতে নামা বাকি ব্যাটসম্যানরা।
একে একে ফিরে যান ফাফ ডু প্লেসি, ইমরুল কায়েস। ডু প্লেসি ৭ বল খেলে মাত্র ৪ রান করে আউট হন মুজিব উর রহমানের বলে। অন্যদিকে অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ১২ বল খেলে ১২ রান করে সাজ ঘরে ফেরেন ডোয়াইন ব্রাভোর বলে।
নিজেদের ইনিংসের শেষ ১০ ওভারে ধুঁকতে থাকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দলের বাকিরা যখন আসা যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন তখন মাটি কামড়ে ধরে কিছু রান তোলার চেষ্টা করেন মঈন আলী ও আবু হায়দার রনি। তবে দুইজনই খুব ধীরগতিতে খেলেন। কিন্তু শেষ দিকে মঈন কিছুটা আগ্রাসী ব্যাট করে ৩২ বল খেলে ৩৮ রান করেন। অন্যদিকে আবু হায়দার ২৭ বলে ১৯ রান করেন।