প্রতি বছর আমাদের দেশে সাপের কামড়ে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। শহরের চেয়ে গ্রামে সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা বেশি। বিষধর সাপের কামড়ে মৃত্যুর অন্যতম কারণ সচেতনতার অভাব, সঠিক চিকিৎসার অভাব বা চিকিৎসা নিতে বিলম্ব হওয়া।

এদানিংকালে দেশের বিভিন্ন জেলায় বেড়েছে সাপের আনাগনা। এতে কোন কোন এলাকায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। দেশের বেশ কিছু জেলায় রাসেলস ভাইপার সাপ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে অনেকে নানাভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। অনেকে প্রচার করছেন যে সাপটি কামড় দিলে দ্রুত মানুষের মৃত্যু হয়।

তবে সময়মত চিকিৎসা না নিলে রাসেলস ভাইপারসহ অনেক সাপের কামড়েও মৃত্যু হতে পারে। এজন্য সাপের কামড় দিলে কি করতে হবে তা জানা জরুরি। জানতে হবে সাপ কামড়ালে প্রথমে কি করতে হবে!

সামাজিক মাধ্যমে সাপের কামড় নিয়ে বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করেন চিকিৎসকরা। সাধারণত একটি বিষাক্ত সাপের কামড়ে দুটি ছোট ছোট চিহ্ন তৈরি হয়। যদি অনেকগুলো ছোট চিহ্ন থাকে তবে বুঝতে হবে এটি বিষাক্ত সাপের কামড় নয়।

দক্ষিণ এশিয়ায় কয়েক শতাধিক প্রজাতির সাপ রয়েছে, এর মধ্যে ৪টি সবচেয়ে মারাত্মক। এগুলো হলো, সাধারণ কোবরা, স’-স্কেলড ভাইপার, সাধারণ ক্রেইট এবং রাসেলস ভাইপার। বিষাক্ত সাপের উপরের অংশটি ত্রিভুজাকার হয়, অন্য দিকে, যে সব সাপের বিষ নেই সেটি স্বাভাবিক থাকে।

সাপে কামড়ালে কী করা উচিত?

  • সাপের কামড় সনাক্ত করার সাথেসাথেই ডাক্তারের সরনাপন্ন হওয়া উচিত।
  • যদি সাপটি হার্টের নিচের অংশে কামড়ায় তবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে শুইয়ে দিতে হবে। বিষের বিস্তার রোধ করতে, ব্যক্তিকে শান্ত রাখতে হবে।
  • একটি পরিষ্কার ব্যান্ডেজ দিয়ে ক্ষত স্থানটি ঢেকে এর চারপাশে আঁটোসাঁটো করে সুতো দিয়ে বাঁধতে হবে। যদি কোনও সাপ পায়ে কামড় দেয় তবে জুতো খুলে ফেলতে হবে এবং দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
  • সাপের কামড়ে যা করা উচিত নয়
  •  যতক্ষণ না ডাক্তার কিছু ওষুধ দিতে বলেন ততক্ষণ কোনও ওষুধ না দেওয়া
  •  ক্ষত হৃৎপিন্ডের উপরের অংশে থাকলে সেটিকে কাটার চেষ্টা না করা।
  •  বিষ চুষে নেওয়ার চেষ্টা না করা।
  •  ক্ষতস্থানে বরফ না ঘষা।
  •  ব্যক্তিকে ক্যাফিন বা অ্যালকোহলযুক্ত জিনিস না দেওয়া।
  •  ভুক্তভোগীকে হাঁটতে না দেওয়া।

সাপের কামড়ের লক্ষণ:

  • বিষ ছড়িয়ে পড়লে বমি হওয়া।
  • শরীর শক্ত হয়ে যাওয়া বা কাঁপুনি আসা।
  • অ্যালার্জি, চোখের পাতা ঝরে যাওয়া।
  • ক্ষতস্থানের চারপাশে ফুলে যাওয়া। জ্বালাপোড়া ও লাল হয়ে যাওয়া।
  • ত্বকের রঙ পরিবর্তন, ডায়রিয়া, জ্বর, পেটে ব্যথা, মাথাব্যথা, বমি-বমি ভাব, পক্ষাঘাত, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, ক্লান্তি, পেশিতে দুর্বলতা, তৃষ্ণা বোধ, নিম্ন রক্তচাপ।