প্রথম দুই ম্যাচে এসেছে সাফল্য। তৃতীয়টিতেও একই ফল এলে দুই ম্যাচ আগেই সিরিজ নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। সেই লক্ষ্যে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে নেমেছে বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাট করা নিউজিল্যান্ড নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে করেছে ১২৮ রান। সিরিজ নিশ্চিত করতে তাই বাংলাদেশকে করতে হবে ১২৯ রান।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের কথা চিন্তা করলে লক্ষ্য খুব একটা সহজ নয়। তবে মিরপুরের উইকেট বিবেচনায় নিলে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে বাংলাদেশকে। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের পিচে ১২৯ রান চ্যালেঞ্জিং স্কোর। সেই হিসাবে স্বাগতিকদের কাজটা মোটেও সহজ নয়।
ষষ্ঠ উইকেটে হেনরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেলের অবিচ্ছিন্ন ৬৬ রানের জুটিতেই চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েছে নিউজিল্যান্ড। মিডল অর্ডার ব্যর্থ হলেও লোয়ার মিডল অর্ডারে রান পেয়েছে সফরকারীরা। দলীয় সর্বোচ্চ ৩৬* রান এসেছে নিকোলসের ব্যাট থেকে। ২৯ বলের হার না মানা ইনিংসটি তিনি সাজান ৩ বাউন্ডারিতে। ব্লান্ডেল ৩০ বলে ৩ বাউন্ডারিতে অপরাজিত থাকেন ৩০ রানে।
বাংলাদেশের সেরা বোলার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে তার শিকার ২ উইকেট। মাহমুদউল্লাহ ১০ রানে নেন ১ উইকেট। মেহেদী হাসান ২৭ রানে ও মোস্তাফিজুর রাহমান ২৯ রানে নেন একটি করে উইকেট।
বল হাতে নিয়েই মোস্তাফিজের ম্যাজিক
নিউজিল্যান্ড দলে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে সম্ভবত ফিন অ্যালেনকে নিয়ে। ইংল্যান্ডের দ্য হান্ড্রেডে আলো ছড়ানো এবং বাংলাদেশে এসে করোনা পজিটিভ হওয়া এই ওপেনার তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে দলে আসায় তার দিকে ছিল বাড়তি মনোযোগ। কিন্তু মোস্তাফিজুর রহমানের কাটারে কাটা পড়লেন তিনি!
বল হাতে নিয়েই সাফল্য পেয়েছেন মোস্তাফিজ। প্রথম বলেই বাঁহাতি পেসার ফিরিয়েছেন অ্যালেনকে। মোস্তাফিজের কাটার বুঝতে না পেরে ব্যাট চালিয়ে কিউই ওপেনার মিডঅনে ধরা পড়েন মাহমুদউল্লাহর হাতে। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে অ্যালেন ১০ বলে ৩ বাউন্ডারিতে করে যান ১৫ রান।
সাইফউদ্দিনের জোড়া আঘাত
উইকেটের চরিত্র ও নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা মেঘ জন্মেছিল বাংলাদেশ ক্যাম্পে। মোহাম্মদ সাঈফউদ্দিনের বোলিংয়ে কেটে যায় সেই মেঘ। এই পেসারের জোড়া আঘাতে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও দাপট বাংলাদেশের।
পাওয়ার প্লেতে বেশ ভালোই দাপট দেখিয়েছে নিউজিল্যান্ড। বিপরীতে বাংলাদেশ দলে অস্বস্তি বাড়ছিল উইকেট না আসায়। অতঃপর সাইফউদ্দিনের জাদুতে ২ বলের ব্যবধানে এলো ২ উইকেট। এই পেসারের দুটো শিকারই এলবিডব্লিউ থেকে। বলে চমৎকার ভ্যারিয়েশন এনে সফল তিনি।
শুরুটা করেন উইল ইয়াংকে ফিরিয়ে। এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে তিনে নামা এই ব্যাটসম্যান ২০ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২০ রান করে ফেরেন প্যাভিলিয়নে। তার বিদায়ের পরপরই ফিরে যান কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। মুখোমুখি দ্বিতীয় বলে তিনিও সাইফউদ্দিনের এলবিডব্লিউয়ের শিকার। রানের খাতা খুলতে পারেননি।
মাইলফলকের ম্যাচ উইকেটে রাঙালেন মাহমুদউল্লাহ
বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমেছেন মাহমুদউল্লাহ। মাইলফলকের ম্যাচটি বল হাতে রাঙালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এই স্পিনারের বলে ফিরে গেছেন রাচিন রবীন্দ্র। এরপর শেখ মেহেদী হাসান তুলে নিয়েছেন অধিনায়ক টম ল্যাথামের উইকেট।
ওপেনিংয়ে নেমে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন রবীন্দ্র। তার সেই প্রতিরোধ ভেঙেছেন মাহমুদউল্লাহ। শততম টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে বল হাতে নেওয়া এই স্পিনার সরাসরি বোল্ড করে ফিরিয়েছেন কিউই ওপেনারকে। ফেরার আগে ২০ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২০ রান করে যান তিনি।
মাহমুদউল্লাহর উইকেট উদযাপনের রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন শেখ মেহেদী হাসান। এই স্পিনার নেন ল্যাথামের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়েছেন মেহেদী। সফট ডিসমিসাল হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে কিউই অধিনায়ক ৯ বলে করেন মাত্র ৫ রান।