চকচক করলেই সোনা হয় না, প্রবাদটাকে আক্ষরিক রূপ দেওয়ার দায়িত্বটা যেন নিয়ে নিয়েছে অলিম্পিক কমিটি। নামে স্বর্ণপদক হলেও, সে পদকের পুরোটা যে সোনা নয়!

শুরুর দিকে অবশ্য সোনা দিয়েই দেওয়া হতো অলিম্পিকের পদক। সেই প্রথা শেষবার দেখা গেছে ১৯১২ সালে। সেবার স্টকহোমে যখন গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের আসর বসেছিল, সেই বছরেই শেষ বিতরণ করা হয়েছিল খাঁটি সোনার পদক! পরের বছর থেকে চকচক করলেই সোনা হয় না প্রবাদটা মাথায় রাখার সময় এসে গেল!

তবে হাজার হোক, প্রতিযোগিতাটা যখন ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত অলিম্পিক সেখানে সোনার পদক না হলেই কী যায় আসে? সেখানে পদক জয়ের সম্মানটাই তো আলাদা, বিশ্বদরবারে নিজ নিজ দেশের পারদর্শিতা প্রমাণের এর চেয়ে বড় সুযোগ কোথায় দেখবেন আপনি?

তবে সোনা যে একেবারেই নেই, বিষয়টা মোটেও তা নয়। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি নির্ধারিত নিয়মানুসারে স্বর্ণপদকে ১ গ্রাম সোনা রাখতেই হয়। এই নিয়মটা কঠোরভাবে মানা হচ্ছে সেই ১৯১২ সাল থেকেই।

সেই পদকটা দেখতে কেমন, তা নিয়েও হয়তো কৌতুহল জাগতে পারে আপনার মনে? এক পাশে থাকে গ্রিকদের বিজয়ের দেবী নাইকির ছবি, সঙ্গে থাকবে ১৮৯৬ সালে অলিম্পিকের প্রথম ভেন্যু ঐতিহাসিক প্যানাথেনাইক স্টেডিয়ামের ছবিও।

অন্য পাশে থাকবে অলিম্পিকের পাঁচ বৃত্তের আইকনিক সে লোগো। প্রতিবার এ আদলে গড়া পদকই শোভা পায় বিজয়ীদের গলায়। তবে প্রতিবার শুধু বদলে যায় পদকের গায়ে খোদাই করা অলিম্পিকের আয়োজক শহরের নাম।

এবারের পদক বেশ কিছু ক্ষেত্রে আর সববারের চেয়ে ভিন্ন। এবারের পদকগুলো বানানো হয়েছে ফেলে দেওয়া বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র দিয়ে। বৈদ্যুতিক বর্জ্যপদার্থ গলিয়ে তা থেকে ক্ষতিকর উপাদানগুলো ফেলে দেওয়া হয়েছে। বাকিটুকু দিয়েই তৈরি হয়েছে টোকিও অলিম্পিকের পদক। এর পেছনে মূলত কাজ করছে আরও একটা উদ্দেশ্য। দেশের নাগরিকদেরকে তাদের বৈদ্যুতিক বর্জ্য নিজ উদ্যোগে সরকারের হাতে তুলে দিতে উদ্বুদ্ধ করতেই আয়োজকদের এই প্রয়াস।

পদক নির্মাতাদের দাবি, এই পদকের চকচকে রঙটা ম্লান হবে না কখনোই। আর এ বিষয়টি প্রতিযোগির অম্লান দক্ষতারই একটা নির্দেশক, জানাচ্ছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম।