শিক্ষার যে কোনও বয়স নেই— সেটি এবার প্রমাণ করেছেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম। ৫৭ বছর বয়সে এসএসসি পাস করেছেন তিনি। পেয়েছেন জিপিএ-৪.৪৬।

জানা গেছে, শারীরিক অসুস্থতার কারণে অষ্টম শ্রেণি পাসের পর আর লেখাপড়া করেননি রফিকুল ইসলাম। তবে বয়স ও চক্ষুলজ্জাকে পাত্তা না দিয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছেন। এবারের ইউপি নির্বাচনে তিনি টানা দ্বিতীয়বারের মতো সদস্য নির্বাচিত হন।

তার এমন সাফল্যে খুশি স্ত্রী-সন্তানসহ গ্রামবাসী। গণমাধ্যমকে তারা জানান, নিজে শিক্ষিত না হলে শিক্ষার গুরুত্ব দেওয়া সম্ভব নয়। তাই ৫৭ বছর বয়সে সন্তানের সঙ্গে রফিকুল ফিরেছেন পড়ার টেবিলে।

রফিকুল ইসলামের এ অর্জনে আনন্দিত পরিবারের সদস্যরাও। এ বিষয়ে তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, ‘আমার খুবই আনন্দ হচ্ছে, আমার বাবা পরীক্ষায় পাস করেছেন।’

তার স্ত্রী আমেনা খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামীর অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল, ম্যাট্রিক পাস করবে। তার সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে দেখে আমার খুব ভালো লাগছে।’

রফিকুল ইসলামের শিক্ষক আবুল কালাম বলেন, ‘উনি (রফিকুল) আমাদের বললেন অনেকেই তো আইএ, বিএ পাস করে। আমরা তো পড়ালেখা না করে ভুল করেছি। এখন কী কোনও সুযোগ আছে লেখাপড়ার? তবে এ জন্য তাকে সইতে হয়েছে গ্রামবাসীর অনেক টিপ্পনী। এবার তার পাসের খবরে তারাই জানাচ্ছেন অভিনন্দন।’

কেন এই বয়সে ফিরলেন বিদ্যালয়ে? ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ বছর মেম্বার থাকার পর আমি বুঝতে পারি, জীবনে শিক্ষার প্রয়োজন আছে। নিজেই যদি শিক্ষিত না হই তাহলে মানুষের সেবা করবো কীভাবে? জনগণকে কী শেখাবো? আমি যদি একটা শিশুকে স্কুলে যেতে বলি সে তো আমার কথা শুনবে না। এ ছাড়াও অফিস-আদালতে শিক্ষা সবসময়ই প্রয়োজন হয়।’

নতুন প্রজন্মের কাছে এখন তিনি উদাহরণ। শিক্ষার আলো ছড়াতে চান ঘরে ঘরে। এসএসসির অধ্যায় শেষ। এবার ভর্তি হতে চান কলেজে।