করোনা টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজের জন্য নাগরিকদের বয়সসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে দেশটির খাদ্য ও ওষুধ বিষয়ক সংস্থা ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এফডিএ । শুক্রবার সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে কেবল ৬৫ বা তার অধিক বয়সীদেরই বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে।

করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টার প্রকোপে গত প্রায় দু’মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে বাড়ছে এ রোগের সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে দেশটির অধিকাংশ নাগরিক করোনা টিকার বুস্টার ডোজ নিতে চাইছেন। সাম্প্রতিক একাধিক জরিপে এ তথ্য জানা গেছে।

ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এফডিএর কর্মকর্তা ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. পল অফিট। তিনি বয়স্ক ও ঝুঁকিতে থাকা নাগরিকদের বুস্টার ডোজ দেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

রয়টার্সকে এ বিষয়ে অফিট বলেন, ‘ব্যাপারটি এমন নয়, যে আমরা সাধারণ মানুষকে বুস্টার ডোজ দেওয়ার বিপক্ষে; বরং আমরা মনে করছি, নাগরিকদের বুস্টার ডোজ দেওয়ার প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে শুরু হওয়াটা ভালো। প্রথম ধাপে বয়স্ক ও অধিকতর ঝুঁকিতে থাকা লোকজনদের বেছে নেওয়া হয়েছে।’

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার এফডিএর বৈঠকে বুস্টার ডোজ প্রদানের বয়সসীমা নির্ধারণে দুটি প্রস্তাবের বিষয়ে ভোট হয়। একটি প্রস্তাবে বলা হয়, বুস্টার ডোজ কেবল বয়স্ক ও ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে দেওয়া হবে; অপর প্রস্তাবে বলা হয়, সববয়সীদের জন্যই বুস্টার ডোজ প্রযোজ্য হবে।

বৈঠকে উপস্থিত এফডিএর ১৮ সদস্যের মধ্যে ১৬ জনই বয়স্ক ও ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে বুস্টার ডোজ দেওয়ার পক্ষে ভোট দেন।

বৈঠকে উপস্থিত অপর এফডিএর অপর কর্মকর্তা মিশেল ইয়ি অবশ্য জানিয়েছেন, মার্কিন জনগণের অধিকাংশই বুস্টার ডোজের জন্য অধীর হয়ে আছেন এবং এফডিএর সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে তাদের হতাশ হওয়া স্বাভাবিক।

রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাটা বেশ কঠিন, কারণ বিপুল সংখ্যক মানুষ বুস্টার ডোজ নেওয়ার জন্য অস্থির হয়ে আছেন।’

‘কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য হলো- এই ডোজ তাদেরকেই দেওয়া হবে, যাদের এটি প্রকৃতপক্ষেই প্রয়োজন।’

তিনি জানিয়েছেন, আগামী ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা সংস্থা সিডিসির (সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক আছে এফডিএর। সেই বৈঠকে বুস্টার ডোজ লাভের যোগ্য নাগকিরদের আওতা বাড়ানো যায় কি না সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

‘তবে আমার মনে হয়- যারা তরুণ বয়সী, শারীরিক অবস্থা বা ইমিউনিটি ভালো এবং গত ছয় মাসের মধ্যে করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন, তাদের জন্য বুস্টার ডোজ প্রয়োজনীয় নয়।’

করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেবে বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৪ কোটি ২৭ লাখ ৯৯ হাজার ৯০৭ জন এবং এ রোগে মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৯০ হাজার ৭১৪ জনের।

সূত্র: রয়টার্স