অবশেষে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত এক নির্বাহী আদেশে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, শুল্ক আরোপ নিয়ে নতুন করে সিদ্ধান্তের কথা জানায় হোয়াইট হাউস।
বাংলাদেশের শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ এবং আফগানিস্তান, আঙ্গোলা, বোসতনিয়া, ক্যামেরুন, চাঁদ, কেস্টিারিকা, কোতে দি আইভোরে, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব দ্য কঙ্গো, ইকুয়েডর ও গিনিয়ার পণ্যের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। অন্যদিকে, আলজেরিয়ার পণ্যের ৩০ শতাংশ, কানাডার ওপর ৩৫ শতাংশ, ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
এছাড়া ইইউভুক্ত দেশগুলোর জন্য শুল্ক শূন্য শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া থাইল্যান্ডের ওপর ১৯ শতাংশ ও ব্রাজিলের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।গত ২ এপ্রিল বাণিজ্য ঘাটতির কথা উল্লেখ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই দিন রোজ গার্ডেনে এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প কোন দেশের ওপর কত পারস্পরিক শুল্ক (রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ) আরোপ করছেন, তার একটি তালিকা তুলে ধরেন। প্রদর্শিত তালিকায় কোন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর কত শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, সে তথ্যও ছিল।
জানা যায় তালিকার তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর বাংলাদেশের আরোপকৃত শুল্কের হার ৭৪ শতাংশ। এজন্য বাংলাদেশের ওপর আরোপ করা হয় পালটা ৩৭ শতাংশ শুল্ক। পরে ৯ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর ওই শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এ সময় শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন দেশকে আলোচনার সুযোগ দেয় ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্রের তিন মাসের সময়সীমা গত ৯ জুলাই শেষ হয় । এর আগের দিন বাংলাদেশের অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়ে ট্রাম্প জানান, বাংলাদেশের পাল্টা শুল্ক ২ শতাংশ কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে। যদিও ৯ জুলাইয়ের পর পাল্টা শুল্ক কার্যকর করেনি মার্কিন প্রশাসন। শুল্কের হার কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তির জন্য ৩১ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন দেশকে সময় দেওয়া হয়, যে তালিকায় বাংলাদেও ছিল।
বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল শুল্ক কমানো নিয়ে আলোচনা জন্য বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে টানা তিন দিন আলোচনা করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। মঙ্গলবার ও বুধবারের পর বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো আলোচনা হয়। আলোচনায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
এতে আরও রয়েছেন- জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী। বৈঠকে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি অংশ নিয়েছেন।