শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে বাংলাদেশ ৩ রানে হেরেছে। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিলো ১২ রান। তবে শেষ দিকে ব্যাটাররা তা তুলতে ব্যার্থ হয়। এই জয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা।
সোমবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। শরিফুল ইসলামকে বোলিংয়ে নিয়ে আসেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। শরিফুলের করা প্রথম বলে অবশ্য স্লিপ দিয়ে ক্যাচ ওঠে, কিন্তু তখন ওই জায়গায় কোনো ফিল্ডার ছিলেন না; হয়ে যায় চার। পরের বলেই উইকেট নেন শরিফুল। তার ফুল লেংথের বল ড্রাইভ করতে গেলেও ঠিকঠাক টাইমিং হয়নি আভিশকা ফার্নান্দোর, ক্যাচ যায় লিটনের কাছে।
পরের ওভারে তাসকিন আহমেদ এসে দেন ৫ রান, দুই ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ছিল কেবল ৯। পরের ওভারে শরিফুল একটি চার ও ছক্কা হজম করেন, চতুর্থ ওভারে মাহেদী হাসানকে আনেন শান্ত; কিন্তু তিনি দেন ১১ রান। পঞ্চম ওভারে এসে দলকে সাফল্য এনে দেন তাসকিন। একটু অতিরিক্ত বাউন্স করা বলে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন কামিন্দু মেন্ডিস। ১৪ বলে ১৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপর নতুন সঙ্গী সাদিরা সামারাবিক্রমাকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন কুশল মেন্ডিস। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৪৫ রান করে শ্রীলঙ্কা। ১১তম ওভারে রিশাদ হোসেন ১৮ ও এর পরের ওভারে শরিফুল ইসলাম ২১ রান হজম করেন। বাংলাদেশকে আবার ম্যাচে ফেরান রিশাদই।
তার বলে লং অফে কুশল মেন্ডিসের ক্যাচ নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৬ বলে ৫৯ রান করে ফিরে যান তিনি। ভাঙে সামারাবিক্রমার সঙ্গে ৬১ বলে ৯৬ রানের জুটি । জুটি ভাঙার পরের ওভারে এসে কোনো বাউন্ডারি হজম না করে ৬ রান দেন মাহেদী।
কিন্তু পরের চার ওভারে ৬৪ রান হজম করেন বাংলাদেশের বোলাররা। এর মধ্যে শেষ ওভারে ২৪ রান দেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৪৮ বলে ৬১ রান করে সামারাবিক্রমা ও আসালঙ্কা অপরাজিত থাকেন ২১ বলে ৪৪ রানে।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ইনিংসের তৃতীয় বলে সাজঘরে ফেরেন লিটন দাস। ম্যাথিউসের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল টেনে অন সাইডে খেলতে গিয়ে ব্যাটের বারের দিকের কানায় লেগে বল চলে যায় উইকেটকিপা্রের গ্লাভসে। ৩ বল খেলে ডাক খেয়ে সাজঘরে ফিরেছেন এই অভিজ্ঞ ওপেনার।
সুবিধা করতে পারেননি আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারও। ১১ বলে ১২ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। বিনুরা ফার্নান্দোকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন আসালঙ্কার হাতে। চারে নেমে ছক্কা মেরে শুরু করেছিলেন তাওহিদ হৃদয়। তবে সেটাই ইনিংসে তার প্রথম ও শেষ বাউন্ডারি। ৫ বল খেলে করেছেন ৮ রান।
শান্ত এদিন শুরু থেকেই বেশ ভুগেছেন। কোনোভাবেই নিজেকে যেন উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত তাকে আউট করে মুক্তি দিয়েছেন মাথিশা পাথিরানা। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২২ বলে ২০ রান।
৬৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারানোর পর জাকেরকে সঙ্গে নিয়ে দলের হল ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে পেয়েছেন ফিফটির দেখা। মাত্র ২৭ বলে এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তবে এরপর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত ৩১ বলে ৫৪ রান করেছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার।
মাহমুদউল্লাহ ফেরার পর গিয়ার পরিবর্তন করেন জাকের। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে জয়ের পথে রেখেছিলেন তিনি। যতক্ষণ উইকেটে থেকেছেন বোলারদের ওপর ছড়াও হয়েই খেলেছেন। ২৫ বলে স্পর্শ করেছিলেন ব্যক্তিগত ফিফটি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি তার প্রথম ফিফটি। শেষ পর্যন্ত তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩৪ বলে ৬৮ রান।