প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৮ সাল থেকে সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা এবং একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশের কারণে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করছে। সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে গত তিন মেয়াদে- (২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ থেকে এ পর্যন্ত) বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ধারাবাহিক অগ্রগতি, সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করেছে।

শুক্রবার (৭ মার্চ) জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির দেয়া বক্তব্যের পর কার্যপ্রণালী বিধি ১৪৭ এর আওতায় জনগণের জীবনমান উন্নয়নে জাতীয় সংসদকে কার্যকর ভূমিকা নিয়ে প্রস্তাবনা পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় সংসদের ৫০ বছরের দীর্র্ঘ পথ চলার ইতিহাস সংক্ষেপে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৩ সালের ৭ই এপ্রিল জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে। ৫০ বছরের পথ চলায় জাতীয় সংসদ অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে আছে। তবে জাতির পিতার হত্যাকারীদের বাঁচাতে ১৯৭৯ সালে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে কালো আইনে পরিণত করা ছিলো সংসদীয় ইতিহাসে সবচেয়ে ঘৃণিত অধ্যায়।

সংসদকে কার্যকর করতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দলমত নির্বিশেষে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত করে সংসদ এখন প্রাণবন্ত ও কার্যকর হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আশা করি, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ এবং জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।

তিনি বলেন, সরকারের জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় জাতীয় সংসদ অনন্য ভূমিকা পালন করছে। সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলো এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

নারীর ক্ষমতায় বাংলাদেশের সংসদ একটি অনন্য দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, বর্তমান সংসদের স্পিকার, সংসদ নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় নেতা, একজন হুইপ, চারজন নারী স্থায়ী কমিটির সভাপতির ভূমিকা পালন করছেন। জাতীয় রাজনীতিতে নারীদের উৎসাহিত করতে সংসদে নারী আসন ৫০টিতে উন্নীত করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, গত তিন মেয়াদে জাতীয় সংসদের ধারাবাহিক অগ্রযাত্রা, সংসদীয় গণতন্ত্রের স্থায়িত্ব ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের ক্ষেত্র রচনা করেছে। জনগণের জীবনমান উন্নয়নে আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বিস্ময়। দারিদ্র্য বিমোচন, দুর্যোগ মোকাবিলা, নারী ক্ষমতায়ন, শিশু মৃত্যুহার হ্রাস ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশ আজ রোল মডেল।

এর আগে, রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব তোলার পর এর ওপর সংসদে আলোচনা শুরু হয়। সরকারি দলের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও শেখ ফজলুল করিম সেলিম আলোচনায় অংশ নেন।