ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাম্প্রতিক ভারতের ঝাড়খণ্ড সফরের সময় বাংলাদেশি নাগরিকদের সম্পর্কে দেওয়া ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করা হবে’ এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনারের কাছে হস্তান্তর করা নোটে এ প্রতিবাদ জানায়।
নোটে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে ভারত সরকারকে রাজনৈতিক নেতাদের এ ধরনের আপত্তিকর এবং অগ্রহণযোগ্য মন্তব্য থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় আরও জোর দিয়েছে যে, প্রতিবেশী দেশের দায়িত্বশীল নাগরিকদের অবস্থান থেকে আসা এ ধরনের মন্তব্য দুটি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার মনোভাবকে ক্ষুণ্ন করে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ বলছে, গত শুক্রবার ঝাড়খন্ডের সাহেবগঞ্জ জেলায় পরিবর্তন যাত্রা নামে একটি কর্মসূচিতে যোগ দেন অমিত শাহ।
সেখানে তিনি ভাষণও দেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের উদ্দেশ্যে হুমকি দেন। তিনি বলেন, ঝাড়খন্ডে বিজেপি সরকার গঠন করতে পারলে প্রত্যেক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে খুঁজে বের করে উল্টো ঝুলিয়ে রাখা হবে।
টানা ১৫ বছরের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি। নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে দেশের মানুষের কাছে নিন্দিত হলেও শেখ হাসিনা সরকার বিজেপির আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিতি পায়। তবে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ভয়াবহ পতন হলে চরম বেকায়দায় পড়ে ভারত।
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে শুরু থেকেই সম্পর্কের টানাপোড়েন লক্ষ্য করা যায়। অন্তর্বর্তী সরকারও শুরু থেকেই ভারতকে অন্যায্য ছাড় না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গত দেড় মাসে সীমান্তে একাধিক হত্যার ঘটনায় সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে, যা বিগত ১৫ বছরে কোনো দিন হয়নি। এছাড়া আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বেশ কিছু বক্তব্য ভারতকে ক্ষুব্ধ করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘দক্ষিণ হস্ত’ হিসেবে পরিচিত অমিত শাহর বক্তব্য সেই ক্ষুব্ধতারই বহিঃপ্রকাশ।