ওয়ানডে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের বদলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিল আফগানিস্তান। সুপার এইটের খেলায় অজিদের ২১ রানে হারিয়েছে এশিয়ার দলটি। রোববার সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৮ রান করে আফগানিস্তান। জবাবে ব্যাটে নেমে ১৯ ওভার ২ বলে ১২৭ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া।

আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শতাধিক রানের উদ্বোধনী জুটিতে আফগানিস্তান ৬ উইকেটে ১৪৮ রান করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে আফগানদের আট বোলারের মুখোমুখি হয়ে অস্ট্রেলিয়া ১৯.২ ওভারে ১২৭ রানে অলআউট হয়। তবে বাজিমাত করেছেন গুলবাদিন-নাভিন।

পাওয়ার প্লেতে নাভিনের তোপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। নিজের প্রথম দুই ওভারে এই পেসার ট্র্রাভিস হেড ও মিচেল মার্শকে প্যাভিলিয়নে পাঠান। মোহাম্মদ নবী প্রথম বলেই ডেভিড ওয়ার্নারকে শিকার বানান। ৩২ রানে তিন উইকেট হারানোর পর মার্কাস স্টয়নিসকে নিয়ে ম্যাক্সওয়েল চাপ সামলে নেন। ১০ ওভারে অজিদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৭০ রান। তখনও ম্যাচ তাদের হাতের মুঠোয়।

গুলবাদিন ১১তম ওভারে বল হাতে নিয়ে কাঁপিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়াকে। নিজের তৃতীয় বলে স্টয়নিসকে (১১) রহমানউল্লাহ গুরবাজের ক্যাচ বানিয়ে দুর্দান্ত ব্রেকথ্রু আনেন। তারপর এই পেসার তার পরের তিন ওভারে টিম ডেভিড, ম্যাক্সওয়েল ও প্যাট কামিন্সকে নিজের শিকার বানান। ছয়-চারে ম্যাক্সওয়েল অস্ট্রেলিয়ার আশার প্রদীপ হয়ে জ্বলছিলেন। কিন্তু গুলবাদিনের দারুণ ডেলিভারিতে নুর আহমেদের চমৎকার ডাইভিং ক্যাচে থেমে যান অজি ব্যাটার। ৪১ বলে ৬ চার ও ৩ ছয়ে ৫৯ রান করেন ম্যাক্সওয়েল।

১১১ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে আর ফেরার পথ খুঁজে পায়নি অজিরা। নাভিন দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে আরেকটি উইকেট পান। অ্যাস্টন অ্যাগারকে ফিরিয়ে তৃতীয় উইকেট পকেটে ঢুকান তিনি। ইনিংসের চার বল বাকি থাকতে আজমতউল্লাহ ‍ওমরজাই জাম্পাকে নবীর ক্যাচ বানিয়ে জয় নিশ্চিত করেন।

চার ওভারে ২০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা গুলবাদিন। সমান সংখ্যক ওভারে একই রান দিয়ে তিন উইকেট নেন নাভিন।

এর আগে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানের ওপেনিং জুটি অস্ট্রেলিয়াকে ভোগায়।১৬তম ওভারে ১১৮ রানে ভাঙে এই জুটি। ৪৯ বলে চারটি করে চার ও ছয়ে ৬০ রান করে আউট হন গুরবাজ। স্টয়নিসের বলে ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাচ হন তিনি। অ্যাডাম জাম্পা পরের ওভারে জোড়া আঘাত করেন। ৪৮ বলে ৬ চারে ৫১ রানে থামেন ইব্রাহিম।

তারপর প্যাট কামিন্স তোপ দাগান। নিজের শেষ দুই ওভারে হ্যাটট্রিক করে আফগানিস্তানের রানের লাগাম টেনে ধরেন তিনি। ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন তিনি। সুপার এইটে দুই ম্যাচেই হ্যাটট্রিক করলেন অজি পেসার।

এই হারে অস্ট্রেলিয়ার সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্নে বড় ধাক্কা লাগলো। শেষ ম্যাচে তারা খেলবে ভারতের সঙ্গে। ম্যাচটি জিততেই হবে তাদের, হারলেই বিদায়। আর আফগানিস্তান বাঁচিয়ে রাখলো সেমিফাইনালে খেলার আশা। এজন্য বাংলাদেশকে হারাতে হবে তাদের। ভারত জিতে গেলে সেমিফাইনালে ওঠার সমীকরণটা জেনেই বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে আফগানরা। এমনকি অস্ট্রেলিয়া ১ রানে জিতে গেলেও সেমিফাইনালে উঠতে পারবে তারা। সেক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়াকে নেট রান রেটে পেছনে ফেলতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩১-এর বেশি রানে জিততে হবে রশিদ খানদের।