জাতিসংঘ পুলিশ সামিটে যোগ দিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদকে যুক্তরাষ্ট্রের শর্তসাপেক্ষে ভিসা দেয়াটা দেশের জন্য অবমাননাকর বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শনিবার (২৭শে আগস্ট) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োাজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, পুলিশপ্রধানদের শর্তসাপেক্ষে ভিসা দেয়াটা দেশের জন্য অবমাননাকর। তার দুদিনের ভিসাপ্রাপ্তি এবং এ নিয়ে সরকারের অবস্থানের কারণে দেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিকভাবে বিনষ্ট হয়েছে বলেও মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার জতিসংঘকে যে ডেলিগেশনের তালিকা প্রদান করে সেখানে ইচ্ছাকৃত ভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাতিসংঘের ১৯৪৭ চুক্তি অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত কোন ব্যক্তি শুধুমাত্র জাতিসংঘের সুনির্দিষ্ট উক্ত সম্মেলনে যোগ দিতে পারবেন এবং তার অবস্থান সীমিত থাকবে জাতিসংঘের প্রাঙ্গনে। আমরা মনে করি, এই ধরনের শর্ত সাপেক্ষে ভিসা প্রদান বাংলাদেশের জন্য অবমাননাকর। সরকারের এই ধরনের দায় দায়িত্বহীন উদ্ধত্তপূর্ণ আচরণের কারনে আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
ফখরুল বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি’সহ দেশের প্রায় সকল গণতান্ত্রিক দল এই সরকারের হিংস্র আচরণ নিয়ে কথা বলে আসছি। ইতমধ্যেই আমাদের দেশের অসংখ্য নেতাকর্মীকে এ সরকার গুম করেছে, ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে, বিনা বিচারে গ্রেফতার করে নির্যাতন করেছে। দেশে কোন গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই, মিটিং মিছিল করার কোন অধিকার নেই, বিনা অনুমতিতে এমনকি কোন সমাবেশ পর্যন্ত করতে দেয়না ও গণমাধ্যমগুলীর উপর একটা সেলফ সেন্সরশিপে বাধ্য করা হয়েছে।
সেরকম প্রেক্ষিতে দেশের মানুষের কথা কর্ণপাত করাতো দূরে থাকুক এমনকি জাতিসংঘের মত বিশ্বের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য শক্তিশালী সংস্থার পক্ষ থেকেও বার বার উদ্বেগ ব্যক্ত করা হলেও তারা তোয়াক্কা করছে না। হত্যা, গুম-খুন তারা চালিয়েই যাচ্ছে। সেই প্রেক্ষিতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশের আইন অনুযায়ী একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এই মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদেরকে তারা চিহ্নিত করেছে যারা ক্ষমতাসীনদের পক্ষে থেকে এইসব মানবাধিকার বিরোধী অপতৎপরতা চালাচ্ছে এবং সেই অভিযোগেই আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠান র্যাব এর উপর এবং র্যাব ও পুলিশের কয়েকজন ব্যক্তিদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ, ভিসা বাতিল এবং তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে।
তিনি বলেন, এ ধরনের একটি পরিস্থিতির কারণে স্বাভাবিকভাবেই দেশের মানুষ আশা করেছিল এই সরকারের বোধোদয় হতে পারে। কিন্তু আমরা অবাক বিস্ময় ও ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম জাতিসংঘের প্রতিনিধি হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে চিহ্নিত এই অপরাধীকে প্রতিনিধি দলে যুক্ত করার মধ্য দিয়ে সরকার প্রমান করলো তারা তাদের হিংস্র, মানবতা বিরোধী অপতৎপরতা চালিয়েই যাবে বিশ্ব বিবেক ও মতামতকে তোয়াক্কা না করে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর আব্দুল মঈন খান, আমির খসর মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান উপস্থিত ছিলেন।