প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, উন্নত দেশগুলো যখন হিমশিম খায়, তখন আমরা সাশ্রয়ী হচ্ছি। এটার অর্থ এই নয়, আমরা লুটপাট করছি। লুটপাট তো বিএনপি করেছে। প্রকৃত গণতন্ত্র থাকলে মানুষের যে উন্নতি হয় আজকে বাংলাদেশ তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছে। কারণ, যে দল জনগণের মধ্যে দিয়ে গড়ে ওঠে, যে দলের নেতাকর্মীরা আত্মত্যাগ করতে পারে একটা জাতির জন্য, জেল-জুলুম সহ্য করতে পারে, সেই দল ক্ষমতায় আসলে যে নীতি-আদর্শ থাকে, সে আদর্শ নিয়ে চললে একটা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হতে পারে, আওয়ামী লীগ সেটা অবশ্যই বাস্তবায়ন করেছে, আওয়ামী লীগ তা প্রমাণ করেছে।

সোমবার (১ আগস্ট) কৃষকলীগের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্বেচ্ছায় রক্ত ও প্লাজমাদান কর্মসূচিতে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় ছিল তারা মানুষের জন্য কী করে গেছে? ’৯৬ থেকে ২০০০ আমরা যা অর্জন করেছিলাম, খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়ে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলাম, বিদ্যুৎ যা মাত্র ১৬০০ মেগাওয়াট ছিল, ৪৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছিলাম, রাস্তা-ঘাট, পুল ব্রিজ থেকে শুরু করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষার বিস্তার ঘটানো, স্বাক্ষরতার হার ৬৫ ভাগে উন্নীত করা, চিকিৎসা সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া, কমিউনিটি ক্লিনিক করে দেওয়া, ভূমিহীন মানুষের জন্য ঘর করার জন্য জাতির পিতা যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন সেটা বাস্তবায়ন করা, সব কাজগুলো আমরা একে একে শুরু করি।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রকৃত গণতন্ত্র থাকলে দেশের যে উন্নতি হয়, এটা আজ প্রমাণিত। আওয়ামী লীগ সেটা প্রমাণ করে দিয়েছে। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবায় কমিউনিটি ক্লিনিক করে দেওয়াসহ নানা কাজ করেছি। বলতে গেলে ৯৬ থেকে ২০০১ সমৃদ্ধির সময় ছিল বাংলাদেশের। পরে তারা এসে কী করলো? ভিক্ষাবৃত্তি বা দেশকে পরনির্ভরশীল করেছে। দুর্নীতি, খুন খারাবি আর লুটপাট ছিল স্বাভাবিক চিত্র। ভোটের অধিকারই ছিল না মানুষের। বিএনপির সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ব্যালট ছিনিয়ে নিয়েছে। তাদের কাছ থেকেও কথা শুনতে হয়, নির্বাচনের কথা তারা বলে কোন মুখে?

বিএনপির সমালোচনা করে ও দশ ট্রাক অস্ত্রের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দশ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়েছে, একটা চালান ধরা পড়েছে, এরকম কত চালান এসেছে আর গেছে। দেশকে সম্পূর্ণ পরনির্ভরশীল করা, দেশের মানুষের নিরাপত্তা সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস করা, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস সৃষ্টি করা, পাঁচ বার দুর্নীতিতে বাংলাদেশ এক নম্বরে ছিল, দুর্নীতি-সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ এইতো ছিল, প্রত্যেকটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি, মেধাবি ছাত্রদের  হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া এবং তাদের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা, শিক্ষার সম্পূর্ণ পরিবেশ ধ্বংস করা, স্বাক্ষরতার হার আবার কমিয়ে সেই ৪৫ থেকে ৫০ ভাগে কমিয়ে আনা, এই তো দিয়েছিল বিএনপি।

দেশ নেত্রী বলেন, বিএনপি নেতারা হারিকেন নিয়ে আন্দোলন করছে। তাদের হাতে হারিকেনই ধরিয়ে দিতে হবে। আর মানুষকে ভালো রাখতে আমরা সব কাজ করছি। সেটাই করবো।

তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করে দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছিল। ভবিষ্যতে যেন আর কেউ এমন ছিনিমিনি খেলতে না পারে।