আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সরকার নতুন ছক তৈরি করছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার বিভিন্ন জায়গায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের রদবদল করছে। আজ বুধবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের মির্জা রুহুল আমিন মিলনায়তনে দোয়া মাহফিলে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। জেলায় জেলায় সমাবেশ এবং মহাসমাবেশ গুলোতে পরিস্কার বলে দেয়া হয়েছে যে, আপনারা আর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। আর একতরফা নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। এদেশের মানুষ তা আর করতে দেবে না। শুধু আমরা নই, আন্তর্জাতিক মহল বলছে, অতীতের নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু হয়নি। এবারের নির্বাচন যদি সকলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু অবাধ না হয়, তাহলে সেই নির্বাচন আমরা গ্রহণ করব না। তাই আমরা সকল শক্তিতে বলিয়ান। আমরা মানুষের শক্তিতে বলিয়ান ও আন্তর্জাতিক বিশ্বেও বলিয়ান।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, আপনাদের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদের দেশনেত্রীকে মুক্ত করা ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনাসহ ৪০ লাখ মানুষের নামে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে এই সরকারকে বাধ্য করতে হবে পদত্যাগ করতে। সংসদ বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমাতা দিয়ে নির্বাচন করে জনগণ যাকে চায় তাদেরকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিতে হবে। তাই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সমস্যাগুলো দূর করে সবাইকে একসঙ্গে সরকারকে ধাক্কা দিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করুন। নইলে দেশের মানুষ সরকারকে ক্ষমতায় থাকতে দেবে না।
শেখ মুজিবুর রহমানকে সরকারের লোকজনই হত্যা করেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান নাকি শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার সঙ্গে জড়িত। আসলে তো এই মহান নেতাকে হত্যা করে তার রক্তের উপর দিয়ে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা খন্দকার মোস্তাকের নেতৃত্বে শপথ নিয়েছিল ১৯৭৯ সালে। সেদিন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনীর সদস্যরা খন্দকার মোস্তাককে স্যালুট দিয়ে আনুগত্য ঘোষণা করেছিল। যারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদেরকে সরকার মন্ত্রী-এমপি বানিয়েছে। সুতরাং এই মিথ্যা কথাগুলো বলে দৃষ্টি অন্যদিকে নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। কারণ তখন বিএনপি তৈরি হয়নি। জিয়াউর রহমান তখন ডেপুটি চিফ ছিল। তার কোনো নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না।
আলোচনা শেষে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য দোয়া ও মোনাজাত করেন নেতাকর্মীরা। এসময় জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আমিন সরকারসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।