আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর। এক মাস সিয়াম সাধনার পর মুসলিম সম্প্রদায় আজ ঈদ উদযাপন করবেন। চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর ভালোবাসা। ঈদের নামাজ শেষে চলবে শুভেচ্ছা বিনিময়। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশঙ্কার মধ্যেই বিগত কয়েক বছর মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে হয়েছে। এবার করোনার প্রাদুর্ভাব কমে যাওয়ায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ঈদকে ঘিরে পূর্বের মতোই আনন্দ-উচ্ছাস ফিরে এসেছে। করোনা মোকাবিলায় ও সংক্রমণ বিস্তার রোধে সরকারের নির্দেশনায় বিগত কয়েক বছর খোলা মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। ঈদ জামাত হয়েছে মসজিদের ভেতরে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে। কিন্তু এবার ঈদগাহ ও খোলা মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আয়োজনে এবার রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জাতীয় ঈদগাহে এবার ঈদের নামাজ পড়েন। এই ঈদগাহে এবার প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি জামাতে অংশ নেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এছাড়া রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গভবনে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদের দিন সকাল ১০টায় তাঁর বাসভবন গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদের ৫টি জামাতের আয়োজন করা হয়েছে। শত বছরের ঐতিহ্য ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে এবার দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে প্রথম জামাত ছিল সকাল ৭টায়। এতে ইমাম করেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান এবং মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন ক্বারি মো. ইসহাক মুয়াজ্জিন। বায়তুল মোকাররমে চতুর্থ জামায়াত হবে সকাল ১০টায়। বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. এহসানুল হক ইমাম হিসেবে থাকবেন এবং মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের চীফ খাদেম মো. শহিদ উল্লাহ।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। ইমাম থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহীউদ্দিন কাসেম এবং মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম হাফেজ মো. জহিরুল ইসলাম।

এছাড়া ৫টি জামায়াতে নির্ধারিত কোনো ইমাম অনুপস্থিত থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা মো. মুজাহিদ আল সাফিদ জানান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২ হাজার ৭৭টি মসজিদ ছাড়াও প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫টি করে ২৭০টি স্থানে করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। মেয়র আতিকুল ইসলাম নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বাসস’কে জানান, এবারের ঈদে ডিএসসিসি’র আয়োজনে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মসজিদগুলোতে ঈদ জামাত আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে সকলকে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত আদায়ের আহবান জানিয়েছেন।

গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে এ বৈঠক হয়।