আন্তর্জাতিক সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন ইংল্যান্ড ব্যাটার অ্যালেক্স হেলস। ইংল্যান্ডের হয়ে ৭০টি একদিনের আন্তর্জাতিক, ৭৫টি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক এবং ১১টি টেস্টে ১৫৬ বার খেলেছেন।
২০১৯ সালে ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়ে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছিলেন এই ইংলিশ ব্যাটার। এরপর ভালো খেলেও সুযোগ হচ্ছিল না দলে। তবে সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জনি বেয়ারস্টোর চোটে ভাগ্য খুলে যায় অ্যালেক্স হেলসের। সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে তার ৮৬ রানের বিস্ফোরক ইনিংসে ফাইনাল নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিশাল পোস্টের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্তের কথা নিজেই জানিয়েছেন অ্যালেক্স হেলস। ইনস্টাগ্রামে করা একটি পোস্টে হেলস লিখেছেন যে, ‘আপনাদের সবাইকে জানাতে চাই যে, আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেশের হয়ে তিন ফরম্যাটেই ১৫৬টি ম্যাচ খেলা আমার জন্য গর্বের বিষয়।’
হেলস আরও লিখেছেন যে, ‘জাতীয় দলের জার্সিতে খেলার সময়ে আমি এমন কিছু স্মৃতি এবং বন্ধু তৈরি করেছি, যা সারা জীবন আমার সঙ্গে থাকবে। এখন আমি অনুভব করছি যে, এখনই এগিয়ে যাওয়ার সঠিক সময়। এবং সে কারণেই আমি অবসরের ঘোষণা করছি। ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে আমি নিশ্চিত ভাবেই কখনও কখনও বড় কিছু পেয়েছি। আবার কিছু সময় খারাপও গিয়েছে। এটি একটি অবিশ্বাস্য যাত্রা ছিল এবং আমি খুব সন্তুষ্ট বোধ করছি যে, ইংল্যান্ডের হয়ে আমার শেষ খেলায় বিশ্বকাপ ফাইনাল জিতেছিলাম।’ প্রসঙ্গত জানা গিয়েছে, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মারকুটে এই ব্যাটসম্যান।
মেলবোর্নের ফাইনালের পর ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশে তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলেছিল ব্রিটিশরা। কিন্তু পিএসএলের সঙ্গে আগেভাগেই চুক্তি থাকায়, বাংলাদেশ সফর থেকে সরে দাঁড়ান অ্যালেক্স হেলস। সামনে সিপিএলেও খেলতে দেখা যাবে তাঁকে। আর সেই কারণে তিনি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজও মিস করতেন। তাই সব ভেবেই আগেভাগে নিজেকে সরিয়ে নিলেন অ্যালেক্স হেলস।
৩৪ বছর বয়সী হেলসের চোখ এখন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেই। বিশ্বের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে তিনি নিয়মিত খেলে থাকেন। হেলস বলেওছেন, ‘আমার উত্থান–পতনের এই যাত্রায় আমি আমার বন্ধুদের এবং পরিবারের অনেক সমর্থন পেয়েছি। ইংল্যান্ডের সমর্থকদের কথা বলব, তাঁরা অবশ্যই বিশ্বের সেরা সমর্থকগোষ্ঠী। আমি নটিংহ্যামশায়ার ও বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় আরও বেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার চেষ্টা করব।’
২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অ্যালেক্স হেলস ইংল্যান্ডের জয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। হেলস ইংল্যান্ড দলের হয়ে ১১টি টেস্ট, ৭০টি ওয়ানডে এবং ৭৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। ইংল্যান্ডের হয়ে ১১টি টেস্ট খেলে ৫টি হাফসেঞ্চুরি সহ ৫৭৩ রান করেছেন।
অ্যালেক্স হেলস তাঁর সেরা ক্রিকেটটা খেলেছেন সাদা বলে। ইংল্যান্ডের হয়ে তিনি ৭০টি ওয়ানডে খেলে ৬টি সেঞ্চুরি এবং ১৪টি হাফসেঞ্চুরি সহ ২৪১৯ রান করেছেন। ৩৭.৭৯ গড় এবং ৯৫.৭২ স্ট্রাইক রেট ছিল হেলসের। টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের হয়ে ৭৫টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ৩০.৯৫ গড়ে এবং ১৩৮.৩৫ স্ট্রাইক রেটে ২০৭৪ রান করেছেন। ১টি সেঞ্চুরি ও ১২টি অর্ধশতরান রয়েছে হেলসের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে।