যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলো নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক মানের বিশ্বাসযোগ্য, অংশিদারিত্বমূলক নির্বাচন দেখতে চায় বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এর সাথে নিরপেক্ষ-তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির কোনো ব্যবধান নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আজ সোমবার সকালে মার্কিন প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সাথে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

এরআগে মার্কিন প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সাথে বৈঠকে বসেছিল বিএনপি। সকাল ১০টা ২০ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে গুলশানে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হলে তারা (বিদেশিরা) যা চাচ্ছে, তা হবে না। নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক মানের বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন এই সরকারের অধীনে হবে না বলেই তারা কথাগুলো বলে যাচ্ছে। সার্বক্ষণিক নজরে রাখছে, অ্যাকশন নিচ্ছে।

বাংলাদেশে সংসদ নির্বাচনের জন্য তাদের পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকেও একই উদ্দেশ্যে প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিদল এসেছে। তারা নির্বাচনের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করছে, আগামী দিনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা।

আমীর খসরু বলেন, সকলের মনে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে প্রশ্ন জেগেছে, তারা (মার্কিন প্রতিনিধিদল) সেই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে এসেছে। তারা অনেকের সাথে কথা বলেছে, আমাদের সাথেও কথা হচ্ছে, আরও অনেকের সঙ্গে কথা বলবে। তবে কথা একটাই ঘুরেফিরে, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক মানের বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে। এটা হতে হলে কী প্রয়োজন, সেটা কীভাবে করা যায়…। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির পক্ষ থেকে বলে এসেছি, শেখ হাসিনার অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।

এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে যে দেশের জনগণ ভোট দিতে পারবে না। এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। বিশ্ব কি বলছে? এই সরকারের অধীনে যে আন্তর্জাতিক মানের সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সে জন্যই তারা এই নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলছে। আমরা বলেছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার অধীনে নির্বাচন, তারা সেভাবে বলবে না। তারা বলছে, সুষ্ঠু নির্বাচন। যেটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারকেই বোঝায়। এ কথা বিদেশিরা বলবে না, এ দাবি উঠছে দেশের জনগণের কাছে থেকে।

তারা কিছু বলছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারাতো এসেছে পর্যবেক্ষণের জন্য। যেমন এসেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা দেশের মানুষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিবে। পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না।

কোন মতামত নিয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা এ দেশের জনগণের মতামত নিবে। সিদ্ধান্ত নিবে।

মার্কিন নির্বাচনী প্রতিনিধিদল কোন কিছু ব্যাপারে বিশেষভাবে জানতে চেয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, সব কিছু বিষয়ে জানতে চেয়েছে তারা।

বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সাথে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ড মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকে আসাদুজ্জামন আসাদ।

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) প্রতিনিধি দলে রয়েছেন বনি গ্লিক, জামিল জাফর, জো কাও।

আর ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) দলে রয়েছেন রিক ইন্ডারফারথ, মারিয়া চিন আব্দুল্লাহ, মানপ্রিত সিং আনানদ।