পাকিস্তানের উত্তর উয়াজিরিস্তানে আফগান সীমান্তের কাছে একটি আত্মঘাতী হামলায় অন্তত ৭ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এই হামলার ঘটনা নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।

নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উত্তর ওয়াজিরিস্তানে একটি পাকিস্তানি সামরিক শিবিরে জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় সাত সেনা নিহত এবং ১৩ জন আহত হয়েছে। সামরিক শিবির হিসেবে ব্যবহৃত একটি দুর্গের সীমানা প্রাচীরে বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি নিয়ে ধাক্কা দেয় একজন, অন্য দুজন সেখানে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

এই হামলাটি ঘটে দোহায় পাকিস্তান ও আফগান প্রতিনিধিদলের মধ্যে নির্ধারিত যুদ্ধবিরতি আলোচনার কয়েক ঘণ্টা আগে, সেখানে দুই দেশ সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনের বিষয়ে আলোচনা করার কথা।

এর আগে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দায়িত্ব এখন আফগান তালেবানের হাতে। প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘর্ষের পর দুই দেশের মধ্যে ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণার একদিন পর তিনি এই মন্তব্য করেন।

শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘যদি তারা (আফগান তালেবান) ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যাগুলোর সমাধান করতে ও আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে চায়, তাহলে আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত।’

তিনি মন্ত্রিসভার বৈঠকে পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামের সন্ত্রাসী সংগঠনকে নির্মূল করতে হবে এবং আফগান ভূখণ্ড পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। ইসলামাবাদ বারবার অন্তর্র্বতীকালীন আফগান তালেবান প্রশাসনকে আহ্বান জানিয়ে আসছে, যেন তারা টিটিপি জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে আনে। টিটিপি হলো একাধিক সন্ত্রাসী সংগঠনের একটি জোট, যা আফগান-পাকিস্তান সীমান্তের দুর্গম অঞ্চলে সক্রিয়।

শাহবাজ শরিফ আরো বলেন, যদি তালেবান প্রশাসন সত্যিই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির পক্ষে থাকে, তবে তাদের এখনই এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, ‘যদি তারা সত্যিকারের আন্তরিক হয়, তাহলে সামনে আসুক।’ শরিফ আবারও আশাবাদ ব্যক্ত করেন, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি দৃঢ় দাবির ভিত্তিতে বজায় রাখা সম্ভব হবে। ডন পত্রিকার উদ্ধৃতি অনুযায়ী, তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘যদি এই যুদ্ধবিরতি কেবল সময় কেনার কৌশল হয়ে থাকে, তাহলে আমরা তা গ্রহণ করব না।

২০২১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর বিদায়ের পর কাবুলে ক্ষমতায় ফিরে আসা আফগান তালেবানদের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে শুরু করে। পাকিস্তানের দাবি, নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিচ্ছে আফগানিস্তান।