দেশে আভ্যন্তরীণ যে সমস্যা আছে সেটা আমরা নিজেরাই সমাধান করব বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এক্ষেত্রে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ দেশের জন্য সম্মানজন নয় বলে মনে করেন তিনি। আভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের কথা বলার ক্ষেত্রে জেনেভা কনভেনশনের নিয়ম মানার আহ্বান জানান সরকারের এই মুখপাত্র।সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিদেশিরা কাউকে ক্ষমতায় বসাবে না, ক্ষমতায় বসাবে বাংলাদেশের জনগণ। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি দূতাবাসের যারা কথা বলেন জেনেভা কনভেনশনে যে নিয়ম রয়েছে তার বাইরে তাদের যাওয়া উচিত না। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় আমরাই সমাধান করবো।
অগ্নিসংযোগের ঘটনা যদি আবারও ঘটে তাহলে সরকার কঠোর অবস্থানে থাকবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অগ্নিসংযোগের ঘটনা অতীতে ঘটেছে। সেটার যদি পুনরাবৃত্তি হয়, তাহলে আমরা সতর্ক পাহারায় থাকবো। পার্টি হিসেবে আমরা ক্ষমতায়, আমরা উস্কানি দিতে পারি না। কিন্তু কেউ যদি বিশৃঙ্খলা করে, আগুন সন্ত্রাস করে জনজীবনে অশান্তি ও দুর্ভোগ সৃষ্টি করে, সে অবস্থায় পরিস্থিতি বলে দেবে কীভাবে আমরা মোকাবিলা করবো। তবে অপকর্ম করলে সেটার জবাব তো শান্তিপূর্ণভাবে করা যাবে না। সেখানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আছে, তাদের দায়িত্ব আছে, তারা সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে।
এ সময় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোন প্রক্রিয়ায় হবে তা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হয়, সেভাবেই নির্বাচন হবে। এ সময়ে রুটিন সরকার থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রুটিন সরকারের দায়িত্ব পালন করবেন। এ ব্যবস্থাতেই আগামী সংসদ নির্বাচন হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চ্যালেঞ্জিং সময় অতিক্রম করছি। সামনে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার আদর্শের প্রতিপক্ষ, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক শক্তি যাদের দোসর, তারা ষড়যন্ত্রমূলক অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে, এই ষড়যন্ত্র আমাদের মোকাবেলা করতে হবে। শান্তিপূর্ণ যেকোনো আন্দোলন রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলার শক্তি-সামর্থ্য আওয়ামী লীগের আছে।’
১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশের কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সবাই তো ভেবেছিল, বিদেশিরাও আশঙ্কা করেছিল যে, ১০ তারিখ মনে হয় এখানে একটা কারবালার রোল পড়ে যাবে। এখানে একটা ধ্বংসলীলা দেখতে পাওয়া যাবে। কিন্তু সেটা কি হয়েছে? দুই দিন আগে সচিবালয়ে আমি বলেছিলাম, আমাদের আকাশে মেঘ ঘনীভূত হয় আবার এই মেঘ কেটেও যায়। আমি এখানেই বলেছিলাম, কী হয়েছে? এগুলো হবে, এক সময় শান্তিও আসবে। এই দেশটা আমাদের সবার, এদেশ তো আওয়ামী লীগের একার নয়। যারা এই দেশে বাস করেন তাদের সবার। কাজেই এখানে গণতন্ত্রটা শক্তিশালী হোক, আমরা সেটা চাই।’
এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে পুনঃনির্বাচিত হওয়ায় তাকে সচিবালয়ে এসে শুভেচ্ছা জানান বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার লোকজন।