সুদানের দারফুরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি বিমানে ভয়াবহ বোমা হামলা চালিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। কলম্বিয়ান ভাড়াটে সৈন্য ও সামরিক সরঞ্জাম বহনকারী এই বিমানটি আরএসএফ (র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস) নিয়ন্ত্রিত নিয়ালা বিমানবন্দরে অবতরণের সময় টার্গেট করে ধ্বংস করা হয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, বুধবার গভীর রাতের এই হামলায় কমপক্ষে ৪০ জন নিহত হয়েছেন। খবর আল জাজিরার।

সুদানের সেনাবাহিনী ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে আরএসএফের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে লিপ্ত। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি নিয়ালা বিমানবন্দরে একের পর এক বিমান হামলা চালানো হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সামরিক সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, আমিরাতের বিমানটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।

তবে আরএসএফের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। আমিরাতও বিমান ধ্বংসের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। এক আমিরাতি কর্মকর্তা অভিযোগটি “মিথ্যা” দাবি করে এর নিন্দা জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো জানিয়েছেন, তার সরকার খুঁজে দেখছে কতজন কলম্বিয়ান এই হামলায় নিহত হয়েছেন এবং তাদের মরদেহ ফিরিয়ে আনা সম্ভব কি না। জানা গেছে, বিমানটি উপসাগরীয় অঞ্চলের একটি ঘাঁটি থেকে উড়েছিল এবং এতে বিদেশি যোদ্ধাদের পাশাপাশি সামরিক সরঞ্জাম ছিল, যা আরএসএফকে সহায়তার জন্য পাঠানো হচ্ছিল।

সুদানের সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে আমিরাতের বিরুদ্ধে নিয়ালা বিমানবন্দরের মাধ্যমে আরএসএফকে ড্রোনসহ উন্নত অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ করে আসছে, যদিও আবুধাবি তা অস্বীকার করেছে। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক গবেষণা ল্যাবের স্যাটেলাইট ছবিতে বিমানবন্দরে একাধিক চীনা তৈরি দূরপাল্লার ড্রোনের উপস্থিতি ধরা পড়েছে।

সম্প্রতি সেনা-সমর্থিত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আমিরাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, তারা কলম্বিয়ান ভাড়াটে সৈন্য নিয়োগ ও অর্থায়ন করছে এবং এই প্রমাণের জন্য যথেষ্ট নথি তাদের হাতে রয়েছে। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষ দিক থেকেই দারফুরে কলম্বিয়ান যোদ্ধাদের উপস্থিতি শুরু হয়, যারা বর্তমানে বিভিন্ন ফ্রন্টে লড়াই চালাচ্ছে।