পুরো পদ্মা সেতুর সবকয়টি ল্যাম্পপোস্টের বাতি জ্বালানো হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার ৫০ মিনিটে দিকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের সেতুর সংযোগ সড়ক থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্ত পর্যন্ত সংযোগ সেতু ও মূল সেতুতে ল্যাম্পপোস্টে একসঙ্গে জ্বলে উঠে ৪১৫টি বাতি। এর মধ্য দিয়ে আলোকিত হয়ে ওঠে সেতুর মাওয়া প্রান্ত থেকে জাজিরা প্রান্ত।

সেতুর দুই লেনেই প্রমবারের মতো জ্বলে ওঠে এই এলইডি বাতি। জাজিরা প্রান্তের সাব স্টেশনের আওতার ২১০ বাতি ও লৌহজং প্রান্তের সাব স্টেশন থেকে ২০৫টি বাতি এখন পদ্মা সেতুকে আলোকিত করছে। পদ্মা সেতুর বাতিগুলো প্রমবারের মতো একযোগে জ্বলে উঠলে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে পদ্মাপাড়ের মানুষ।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের জানান, মুন্সিগঞ্জ ও শরীয়তপুর পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির দেয়া বৈদ্যুতিক সংযোগের মাধ্যমে এই প্রথম পুরো সেতুর ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্টে বাতি জ্বালানো হয়। এর আগে সোমবার বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে মূল সেতুর ২০৭টি বাতি জ্বালানো হয়।

দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান, সেতুর ল্যাম্পপোস্টে বাতিগুলো সেট করার পর ধাপে ধাপে পরীক্ষা চালানো হয়। পুরো সেতুতে আটটি সার্কিট প্যানেল রয়েছে। এর মধ্যে মূল সার্কিট চারটি ও সাব সার্কিট চারটি। প্রমম দিন ২৪টি বাতি জ্বালানো হয়। এরপর ধাপে ধাপে পরীক্ষা চলে। গত ৪ জুন থেকে শুরু করে গত শুক্রবার সেতুর ৪১৫ বাতির সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। মঙ্গলবার একযোগে পরীক্ষার জন্য জ্বালানো হয় সব কয়টি বাতি। ল্যাম্পপোস্ট এবং বাতিগুলোকে ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার বেগের বাতাস কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। পদ্মায় ঝড়ো বাসাতের কথা চিন্তা করে এগুলো ২০০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া বাতাস সহ্য করে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে।

তিনি আরো বলেন, দিনের বেলায় মেঘলা আকাশ বা ঘনকুয়াশায় আলো স্বল্পতায় অটো জ্বলবে বাতিগুলো। অর্থাৎ প্রাকৃতিক আলোর স্বল্পতা দেখা দিলে বাতিগুলো নিজে থেকেই জ্বলে উঠবে।

গত বছরের ২৫ নভেম্বর মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া প্রান্তে প্রথম ল্যাম্পপোস্ট বসানোর কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল এসব ল্যাম্পপোস্ট বসানো ও এর মধ্যে বাতি লাগানোর কাজ শেষ হয়। গত ৪ জুন বিকেলে পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালানো হয়। ওইদিন সেতুর ১৪ নম্বর থেকে ১৯ নম্বর পিলারের মাঝামাঝিতে ২৪টি ল্যাম্পপোস্টে বাতি জ্বালানো হয়। এরপর ১১ জুন পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ধাপে ধাপে সেতুর সবকটি বাতি জ্বালানো হয়।

সড়কবাতি ছাড়াও বর্তমানে শেষ পর্যায়ের অন্যান্য কাজের মধ্যে রোড মার্কিং, হ্যান্ড রেলিং, মুভমেন্ট জয়েন্ট প্যারাপেটের কাজ চলছে।

আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন ভোর ৬টা থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে পদ্মা সেতু।