মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একমাত্র টেস্টে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড। তৃতীয় দিনশেষে আইরিশরা এগিয়ে ১৩১ রানে। প্রথম ইনিংসে ২১৪ রানে অলআউট হয়েছিল সফরকারীরা, বাংলাদেশ করেছিল ৩৬৯ রান। মূলত হ্যারি টেক্টরের ফিফটির পর লোরকান টাকারের অভিষেক সেঞ্চুরিতে ইনিংস হারের শঙ্কা উড়িয়েছে সফরকারীরা। এরপর লোয়ার অর্ডারে অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে লড়াকু লিড নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে অ্যান্ড্রু বালবার্নির দল।

দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই চাপে পড়ে আয়ারল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ৬৬তম ওভারে বোলিংয়ে এসেছিলেন সাকিব, দ্বিতীয়টিতে আসেন প্রথম ওভারেই। চতুর্থ বলে উদ্বোধনী ব্যাটার জেমস ম্যাককালামকে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরান তিনি। আরেক উদ্বোধনী ব্যাটার মুরে কামিন্সও বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি।

১২ বলে ১ রান করে তাইজুল ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। ৭ রানে দুই উইকেট হারানো পর আইরিশদের চাপ আরও বাড়ে অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি ফিরলে। ১২ বলে ৩ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি। তাইজুলের ইসলামের বলে তিনি হন বোল্ড। পরে ৪ বলে ১ রান করে সাকিবের বলে আউট হন কার্টিস ক্যাম্পার। ১৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে আয়ারল্যান্ড।

এরপর থেকে আইরিশদের ইনিংস এগিয়ে নিচ্ছিলেন পিটার মুর ও হ্যারি টেক্টর। দ্বিতীয় দিনে কোনো বিপদ ছাড়াই শেষ করেন তারা। এ দুজন তৃতীয় দিনের সকালটাও সামলেছেন দারুণভাবে। মাঝে ‍দুয়েকটি বলে ভুগতে হলেও রিভার্স সুইপ করছেন, লং অন দিয়ে ছক্কা মেরেছেন তারা।

দুজনের জুটিতে রান কম এলেও আশা বাড়ছিল আয়ারল্যান্ডের। কিন্তু শরিফুল ইসলামের বলে ধৈর্যহারা হন পিটার মুর। এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালাতে গিয়ে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ৩ চারে ৭৮ বল খেলে ১৬ রান করে সাজঘরে ফেরত যান মুর। ভাঙে টেক্টরের সঙ্গে তার ১৫৪ বলে ৩৮ রানের জুটি।

জুটি ভাঙলেও পথ হারায়নি আয়ারল্যান্ড। টেক্টরের সঙ্গী হয়ে দারুণ খেলছেন লরকান টাকারও। তিনি হচ্ছেন কিছুটা আক্রমণাত্মক হয়েও। এবাদত হোসেনের ‘শর্ট বলের’ ফাঁদ তিনি পুল করে সামলেছেন। ৪ চারে ৪৩ বলে ২৪ রান টাকার ও ৫ চার ও ১ ছক্কায় ১৩২ বলে ৪৩ রান করে টেক্টর অপরাজিত থেকে লাঞ্চে গিয়েছিলেন।

বিরতির পর এসে টেক্টরকে আউট করেন তাইজুল ইসলাম। তার ফুল লেংথের বলে সুইপ করতে গেলে তা প্যাডে আঘাত হানে টেক্টরের। রিভিউ নিয়েও এলবিডব্লিউ থেকে বাঁচতে পারেননি আইরিশ ব্যাটার। ৭ চার ও ১ ছক্কায় ১৫৯ বলে ৫৬ রান করে আউট হন তিনি।

কিন্তু অন্য প্রান্তে দারুণ খেলছেন টাকার, তাকে ভালো সঙ্গ দেন টাকারও। চা বিরতি থেকে ফিরে সেঞ্চুরির দেখা পান টাকার। আইরিশদের কেবল দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে টেস্টে এই কীর্তি গড়েন তিনি। দারুণ কীর্তির পরও খুব বেশি উচ্ছ্বসিত দেখা যায়নি তাকে।

সেঞ্চুরির পর অবশ্য খুব বেশিক্ষণ টেনে নিতে পারেননি টাকার। এবাদত হোসেনের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে ব্যাট চালাতে গিয়ে কাভারে শরিফুল ইসলামের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ১৪ চার ও ১ ছক্কায় এর আগে ১৬২ বলে ১০৮ রান করেন তিনি।

তার বিদায়ের পরও দলকে টেনে নিয়েছেন ম্যাকব্রাইন। হাফ সেঞ্চুরি পেরিয়েও অপরাজিত আছেন তিনি, আইরিশদের আট নম্বর ব্যাটার ৮ চার ও ১ ছক্কায় ১৪৪ বলে করেছেন ৭১ রান। তাকে মাঝে কিছুক্ষণ সঙ্গ দিয়েছিলেন মার্ক অ্যাডায়ার। ৪৯ বলে ১৩ রান করে তিনি ফিরলে তার জায়গা নিয়েছেন গ্রাহাম হিউম। ২৩ বলে ৯ রান করে ম্যাকব্রাইনের সঙ্গে চতুর্থ দিন শুরু করবেন তিনি।