উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনকে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারালো ইন্টার মিলান। রক্ষণ জমাট রেখে প্রতি-আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দারুণ এক জয় তুলে নিল ইন্টার মিলান। সান সিরোয় মঙ্গলবার রাতে ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে জিতেছে স্বাগতিকরা। ইন্টারের জয়ের নায়ক হাকান কালহানোগলু একমাত্র গোলটি করেন।

ঘরোয়া লিগে টানা পাঁচ ম্যাচে জাল অক্ষত রেখে এবং টানা ছয় ম্যাচ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামে বার্সেলোনা। বিপরীতে মৌসুমের শুরু থেকেই ধুঁকছে ইন্টার; সেরি আয় আট ম্যাচের চারটিতেই হেরে নেমে গেছে নবম স্থানে।

তবে তাদের মুখোমুখি লড়াইয়ে পাল্টে গেল সব হিসাব-নিকাশ। প্রতিপক্ষের মলিনতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে জয়ের আনন্দে ভাসল ইন্টার। সঙ্গে এই গ্রুপ থেকে শেষ ষোলোয় ওঠার হিসাবটাও হয়ে উঠল রোমাঞ্চকর।

তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বায়ার্ন মিউনিখ। দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে সিমোন ইনজাগির ইন্টার। আসরে টানা দ্বিতীয় হারের পর বার্সেলোনা ৩ পয়েন্ট নিয়ে আছে তৃতীয় স্থানে।

কালহানোগলুর নৈপুণ্যে ম্যাচের সপ্তম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত ইন্টার। ভেস্তে যেতে বসা একটি আক্রমণে আলগা বল পেয়ে প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে বুলেট গতির শট নেন তিনি। সময়মতো লাফিয়ে কোনোমতো এক হাত দিয়ে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠান বার্সেলোনা গোলরক্ষক।

এরপর একচেটিয়া বল দখলে রেখে খেলতে থাকে বার্সেলোনা। কিছু হাফ-চান্সও পায় তারা, তবে রবের্ত লেভানদোভস্কি, রাফিনিয়ারা প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে যথেষ্ট কার্যকর হতে পারছিলেন না। বরং প্রতি-আক্রমণে তুলনামূলক বেশি ভীতি ছড়াচ্ছিল ইন্টার।

তেমন এক পাল্টা আক্রমণে ২৮তম মিনিটে মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনকে কাটিয়ে জালে বল পাঠান হোয়াকিন কোররেয়া। তবে তিনি অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল।

একই ছন্দে খেলা এগিয়ে চলার মাঝেই বিরতির ঠিক আগে সফরকারীদের স্তব্ধ করে দেন কালহানোগলু। লাউতারো মার্তিনেসের জোরাল শট রক্ষণে প্রতিহত হওয়ার পর সতীর্থের পাস পেয়ে ২৫ গজ দূর থেকে নিখুঁত শট নেন তুর্কি মিডফিল্ডার। বল পোস্ট ঘেঁষে জালে জড়ায়।

বিরতির পর বার্সেলোনা প্রথম উলে­খযোগ্য সুযোগটি পায় ৬১তম মিনিটে। তবে উসমান দেম্বেলের কোনাকুনি শট গোলরক্ষকের গ্লাভস ছুঁয়ে পোস্টে লাগে। পাঁচ মিনিট পর জালে বল পাঠান পেদ্রি, তবে তার আগে বল আনসু ফাতির হাতে লাগায় ভিএআরের সাহায্যে হ্যান্ডবলের বাঁশি বাজান রেফারি।

নির্ধারিত সময়ের শেষের পাঁচ ও যোগ করা সময়ের আট মিনিট একচেটিয়া আক্রমণ করে বার্সেলোনা। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ডি-বক্সে ইন্টারের বদলি ডিফেন্ডার ডামফ্রিসের হাতে বল লাগলে পেনাল্টির জোরাল আবেদন করে সফরকারীরা। তবে ভিএআরের সাহায্য তাতে সাড়া দেননি রেফারি।

কিছুক্ষণ পর আরেকটি সুযোগ পায় তারা। তবে লেভানদোভস্কির প্রচেষ্টায় বল পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এরপর, শেষের বাঁশি বাজতেই জয়োল্লাসে ফেটে পড়ে সান সিরো। কঠিন সময়ে দলের আত্মবিশ্বাস ফেরানো জয়। আগামী বুধবার ফিরতি লেগে মুখোমুখি হবে দল দুটি, কাম্প নউয়ে।