রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় আবারও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে তারা পুনরায় সড়ক অবরোধ করেন। এতে ইফতারের সময় কিছুক্ষণের জন্য শুরু হওয়া যান চলাচল আবার বন্ধ হয়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৭টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত নিউ মার্কেট এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। এরপর শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের মূল ফটকের সামনে রাস্তার দুই পাশে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। বর্তমানে তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।

রাস্তায় আছেন নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও। তারা নিউ সুপার মার্কেট সংলগ্ন ফুট ওভার ব্রিজের নিচে অবস্থান নিয়ে আছেন। সেখানে কাছেই অবস্থান নিয়ে আছে পুলিশ। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিউ মার্কেট এলাকায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঢাকা কলেজের সব হল বন্ধ ঘোষণা করে মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। যদিও এ নির্দেশনা মানেননি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যার পরও ঢাকা কলেজের হলে শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে। হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে অনড় রয়েছেন তারা।

এর আগে আজ সারাদিন নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে ঢাকা কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মীরাও অনেকে আহত হন। তাদের বেশিরভাগই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া কিছু শিক্ষার্থী বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অন্তত দুজন শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সোমবার রাতের হামলার প্রতিবাদে আজ সকালে মানবন্ধন করতে গেলে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এরপরই দুপক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের মাঝে দোকানিরা কিছু শিক্ষার্থীকে বেদম পিটিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

এদিকে সংঘর্ষের খবর সংগ্রহে গিয়ে নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের ন্যক্কারজনক হামলার শিকার হয়েছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের অন্তত ৯ জন সাংবাদিক। তাদের ৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করেন ব্যবসায়ীরা

রাজধানীর আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে একজন মুমূর্ষু রোগীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। দুপুর ১২টার দিকে নিউমার্কেটের সামনে পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্সটি থামান। কিন্তু ভেতরে রোগী থাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি ছেড়ে দেন তারা।

এরপর অ্যাম্বুলেন্সটি চন্দ্রিমা মার্কেটের সামনে পৌঁছালে ব্যবসায়ীরা আটকে দেন। এ সময় অতর্কিতভাবে গাড়িটির ওপর হামলা শুরু করেন তারা। গাড়ির চালক কাগজপত্র দেখিয়ে মুমূর্ষু রোগীর কথা বলে অনুনয় বিনয় করলেও ক্ষ্যান্ত হননি ব্যবসায়ীরা। এ সময় ভেতরে থাকা রোগী বাঁচার আকুতি জানালেও তা শোনেননি কেউ।