ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৮শে জুন) সকাল আটটায় শুরু হয় ভোটাভুটি। চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। তবে ভোটার উপস্থিতি বেশি থাকলে মধ্যরাত পর্যন্ত ভোটগ্রহণের সময় বাড়ানো হতে পারে।
ভোটহগ্রহণ শেষে আগামী দুই দিনের মধ্যে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর কোনও প্রার্থীই কমপক্ষে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে শীর্ষ দুই প্রার্থীর মধ্যে পরবর্তীতে রান-অফ রাউন্ডের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
গতকাল দুইজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়ায় এখন লড়াই হচ্ছে বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সাবেক প্রধান ও বর্তমান স্পিকার বাঘের কালিবাফ, পারমাণবিক মধ্যস্ততাকারী দলের প্রধান সাইদ জালিলি, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তফা পুর মোহাম্মদি ও সংস্কারপন্থী নেতা মাসুদ পেজেশকিয়ান-এ চার নেতার মধ্যে। এদের মধ্যে বাঘের কালিবাফ ও সাইদ জালিলি সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। আর তাই নির্বাচনের ফলাফলে ইরানের নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসার কোনও সম্ভাবনা নেই।
নিজের ভোট ব্যালট বাক্সে ফেলার পর সর্বোচ্চ নেতা উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন একটি আনন্দের দিন। কারণ, এদিন জনগণ আগামী কয়েক বছরের জন্য তাদের সরকার প্রধানকে নির্বাচন করবেন। ইরানের শক্তিমত্তা ও সম্মান এই নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে।
এ সময় তিনি সর্বস্তরের জনগণকে ভোট কেন্দ্রগুলোতে উপস্থিত হয়ে তাদের রায় প্রদানের আহ্বান জানান। খামেনি বলেন, আমি আশা করব ইরানি জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেবেন। ভোটপ্রদান এমন একটি কাজ যার জন্য কোনো অর্থ খরচ করতে হয় না, কিন্তু এর মাধ্যমে অনেক সুফল পাওয়া যায়। যে কাজে খরচ নেই কিন্তু অনেক সুফল তা থেকে বিরত থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
শুক্রবারের এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে মূলত চার প্রার্থীর মধ্যে। তারা হলেন, মাসুদ পেজেশকিয়ান, মোস্তফা পুরমোহাম্মাদি, সাইদ জলিলি এবং মোহাম্মদ বাকের কলিবফ।
যদিও নির্বাচনের ফলে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা নেই, তবে ভোটের ফলাফলটি সাড়ে তিন দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা ইরানের ৮৫ বছর বয়সী সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করতে পারে।
গত মাসে এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তাই নির্ধারিত সময়ের এক বছর আগেই দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই নতুন প্রেসিডেন্ট খুঁজে নেবে ইরান।