এবার ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় সিরিয়ার সেনাবাহিনীর ছয় কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। রাজধানী দামেস্কের দক্ষিণে ওই ড্রোন হামলায় চালায় ইসরাইল। সিরিয়ার রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত এল আকবরিয়া টিভি এ খবর জানিয়েছে। দামেস্কের বাইরে নতুন করে ইসরায়েলি সেনা অভিযানের বিষয়ে সিরিয়ার পক্ষ থেকে নিন্দা জানানোর এক দিন পর এ হামলা ও হতাহতের ঘটনা ঘটল।
আজ বুধবার দিনের শুরুতে সিরিয়ার সংবাদমাধ্যমটি জানায়, দামেস্কের উপকণ্ঠে আল-কিশওয়াহ শহরের ঠিক পাশে সেনাবাহিনীর অবস্থানে ইসরায়েলি ড্রোন আঘাত হেনেছে। সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত সোমবার জানায়, মাউন্ট হারমন পাহাড়ের আশপাশে দেশটির সীমান্তের ভেতরে অবস্থিত একটি এলাকা দখলে নেওয়ার জন্য ৬০ জন সেনার একটি দল পাঠিয়েছে ইসরাইল।
জায়গাটি সিরিয়া-লেবাননের সীমান্তঘেঁষা এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি পাহাড়ের চূড়ার পাশে।যদিও ইসরাইলের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এ অভিযানের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল–শাইবানি অভিযোগ জানিয়ে বলেন, ইসরায়েল তাদের ‘সম্প্রসারণবাদী ও বিভাজন পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছে। এ জন্য দেশটি অসামরিক বা সমঝোতার মাধ্যমে নিরস্ত্র রাখা হয়েছে-এমন এলাকাগুলোয় গোয়েন্দা ও সামরিক স্থাপনা বানাচ্ছে।এ মাসের শুরুর দিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘বৃহত্তর ইসরাইলের’ বিষয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।
নেতানিয়াহুর এ ধারণা উগ্র জাতীয়তাবাদী ইসরায়েলিরা ব্যাপকভাবে সমর্থন করছেন। এ ধারণায় দখলে রাখা ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর, গাজা এবং লেবানন, সিরিয়া, মিসর ও জর্ডানের কিছু অংশের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণের অভিপ্রায়ের কথা জানানো হয়েছে। ৩১টি আরব ও ইসলামিক দেশের জোট এবং আরব লিগ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এমন অবস্থান আন্তর্জাতিক আইন আর স্থিতিশীল আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভিত্তি লঙ্ঘনকারী একটি ভয়ংকর ও বিপজ্জনক পদক্ষেপ।
গত ডিসেম্বের সিরিয়ায় দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়। এর পর থেকে সিরিয়াজুড়ে বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা ও সম্পদে কয়েক শ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সেই সঙ্গে সিরিয়ার গোলান মালভূমির অসামরিক বাফার জোন’ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিজেদের দখল অভিযান আরও বিস্তৃত করেছে ইসরায়েল। এর মধ্য দিয়ে ইসরায়েলিরা ১৯৭৪ সালে সিরিয়ার সঙ্গে সই করা কৌশলগতভাবে সংঘাত থেকে পিছু হটে থাকার চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে বলেও মনে করা হচ্ছে।