ইসরায়েলি হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ হোসেইন বাকেরি নিহত হয়েছেন। এছাড়া এ হামলায় আরও দুই পরমাণু বিজ্ঞানীও নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। শুক্রবার (১৩ জুন) ভোররাতে ইসরায়েল এই হামলা চালায়।
হামলায় তেহরানের একাধিক আবাসিক ভবন লক্ষ্যবস্তু করা হয়, যার ফলে বেসামরিক মানুষের হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। ইরান সরকার এই হামলাকে একটি সন্ত্রাসী তৎপরতা হিসেবে অভিহিত করেছে।
হামলায় আরও নিহত হয়েছেন ইসলামিক রেভ্যুলুশনারি গার্ডস কর্পসের (আইআরজিসি) কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সেন্ট্রাল হেডকোয়ার্টারের কমান্ডার মেজর জেনারেল গোলাম আলি রাশিদ, এবং ইরানের দুই বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী মোহাম্মদ মাহদি তেহরাঞ্চি ও ফারিদুন আব্বাসি।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা তাসনিম এবং তেহরান টাইমস জানিয়েছে, ইরানের বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা প্রাণ হারিয়েছেন।
প্রতিবেদনে জানা গেছে, হামলার সময় মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি আইআরজিসির হেডকোয়ার্টার্সে অবস্থান করছিলেন। এই হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরির মৃত্যুর খবর গুঞ্জন বলে উড়িয়ে দেয় ইরানি বার্তা সংস্থা ইরনা।
ইসরাইল জানিয়েছে, তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা ঠেকাতে দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। ইরানের সংবাদমাধ্যম এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অঞ্চলে ইসরাইলের হামলা চালানোর বিষয়টি জানানো হয়েছে।
ইসরাইল এ হামলাকে ‘রাইজিং লায়ন’ নাম দিয়েছে। ইরানের কমান্ডার এবং ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানোর পর পালটা হামলার আশঙ্কায় সারা দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রেকর্ডকৃত এক ভিডিও বার্তায় জানান, ‘আমরা ইসরাইলের ইতিহাসের একটি নির্ণায়ক মুহূর্তে আছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসরাইল একটি অভিযানে ইরানের পারমাণবিক বোমা নির্মাণে যুক্ত বিজ্ঞানী, তাদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি এবং নাতাঞ্জের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে এবং এই অভিযান আরও কয়েক দিন চলবে।’
এদিকে, ইসরাইলের বিমান হামলার পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তেহরানে হামলার জন্য ইসরাইলকে ‘কঠোর শাস্তি’ ভোগ করতে হবে।