দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রিতে নেমে এসেছে। কনকনে শীতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ। বুধবার (৩ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত কয়েকদিন ধরে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে এখানে। হিমালয়ের নিকটবর্তী হওয়ায় এখানে শীতের তীব্রতা একটু বেশি। এই সময়টাতে তাপমাত্রাও নিচে নেমে আসে এখানে। তাপমাত্রা আরও কমার আশঙ্কা রয়েছে এই জেলায়।
এদিকে, তীব্র শীতের সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মত কুয়াশা পড়ছে ঠাকুরগাঁওয়ে। যার ফলে জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলাবাসীর। ঘন কুয়াশা থাকায় দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহনগুলো। ঘন কুয়াশার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জয়পুরহাটেও। অন্যদিকে, উত্তরের জেলা নীলফামারীতে ঘন কুয়াশা আর হিমশীতল বাতাসে কাবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। দুইদিন ধরে দেখা মিলছেনা সূর্যের।
গত রোববার তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল, যা আজ সকাল ছয়টায় রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি, আবহাওয়াবিদরা যাকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বলেন।
যদি তাপমাত্রা কমতে কমতে নির্দিষ্ট মাত্রায় পৌঁছায় তখন শৈত্যপ্রবাহ চলছে বলে ধরে নেওয়া হয়। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে এলে তাকে শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা যদি আট থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয় তবে সেটাকে ধরা হয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। তাপমাত্রা এর চেয়ে কমে ছয় থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে হয় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আর চার থেকে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে সেটাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। তাপমাত্রা চার ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে সেটা হয় অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ।
এদিকে কনকনে বাতাসের পাশাপাশি ঘনকুয়াশা পড়ায় বিপাকে পড়েছেন পঞ্চগড়ের মানুষ। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের অবস্থা বেশি শোচনীয়। পেটের দায়ে উপায় না পেয়ে এমন শীতকে উপেক্ষা করেই কাজে যেতে হচ্ছে তাদের। ব্যস্ততম সড়কগুলোতে জনসাধারণের চলাচল অনেকটাই কমে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত হিমেল হাওয়া ও কুয়াশায় ঢাকা থাকে পঞ্চগড়। তবে কয়েকদিন দুপুরের দিকে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও তিন দিন ধরে অনেক জায়গায় তাও দেখা যায় না। কনকনে ঠাণ্ডায় ক্ষেত-খামারের কাজ আর গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মানুষ।
শীত নিবারণে পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটছে নিম্নআয়ের মানুষের। বিভিন্ন এলাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে বাড়ির আশপাশে এবং পথঘাটে শীতার্তদের শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে।
তীব্র শীতে শিশু এবং বয়স্ক মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে।