ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে প্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসের পানিতে প্লাবিত হয় গোটা সুন্দরবন। ঝড়ের একদিন পর ওই এলাকার ক্ষয়ক্ষতির ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। সুন্দরবনের গাছপালা ও বন্যপ্রাণীর বিপুল ক্ষতি হয়েছে। বন্য প্রাণী ও বনজীবীদের জন্য করা মিঠাপানির পুকুরগুলোতে ঢুকে পড়েছে সাগরের লোনাজল। মিলছে হরিণের মৃতদেহ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন বিভাগের অফিস, কর্মীদের থাকার জায়গা, জেটিসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির স্বীকার হয়েছে বন্যপ্রাণীরা। এ পর্যন্ত বনের শুধু কটকা এলাকা থেকে ৩০টি মৃত হরিণ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। এখনও বনজুড়ে তল্লাশি চলছে, তাতে মৃত হরিণের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে বনবিভাগ।

এছাড়া ঝড়ে বনের অভ্যন্তরে ২৫টি টহল ফাঁড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বনের ভেতরে লবণ পানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে অন্তত ৮০টি মিষ্টি পানির পুকুরও।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, ‘এখনো আমরা সব জায়গায় যেতে পারছি না। সাগর ও নদী উত্তাল। প্রায় ২৫ থেকে ৩০ ঘণ্টা জলোচ্ছ্বাস ছিল। যার ফলে অনেক বন্য প্রাণী মারা যাওয়ার আশঙ্কা করছি। আরও বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে আমরা জানাতে পারব।’ এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন, কটকার পুকুরটি সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। বিভিন্ন বন অফিসের জানালার গ্লাস, সোলার প্যানেল ও পানির ট্যাংক ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেটি, পুকুরসহ অন্যান্য স্থাপনাও।

সুন্দরবনের দুবলার চর এলাকায় উপড়ে পড়া গাছপালার মধ্যে আহত অবস্থায় পড়ে থাকা একটি হরিণের ছবি দিয়ে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘হরিণটি বড় ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেলেও আরও কত হরিণ ও বন্য প্রাণী জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে, তার কোনো হিসাব কখনো পাওয়া যাবে না।’ তিনি বলেন, বন্য প্রাণীর মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। দুটি মৃত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বনের মধ্যে প্রাণীরা মারা গেলে সব তথ্য পাওয়াও যাবে না।