দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে চট্টগ্রাম-৮ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন চট্টগ্রামের নারীনেত্রী ও সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী। অন্যদিকে জিনাত সোহানা চৌধুরীর স্বামী মোহাম্মদ এমরানও একই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন কিনেছেন।

এডভোকেট জিনাত সোহানা চোধুরী চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বোর্ড মেম্বার। বেসরকারি কারা পরিদর্শক হিসেবে কয়েক মেয়াদে সুনামের সাথে কাজ করেছেন তিনি। করোনাকালে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিত মুখ জিনাত সোহানা চোধুরী মানবিক কার্যক্রম প্রশংসিত হয় সব মহলে।

অন্যদিকে জিনাত সোহানার স্বামী মোহাম্মদ এমরান রাজনীতির পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা স্টেট আওয়ামী লীগের সভাপতি। এর আগে দীর্ঘ সময় তিনি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সুবৃহৎ কমিউনিটি সংগঠন  ‘ফ্লোরিডা বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের’ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দীর্ঘদিন থেকে। এমরানের যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিকে দুর্দিনের নেতা হিসেবে পরিচিতি রয়েছে। আশির দশক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের শক্তিশালী ভিত গড়ে তুলেছেন এমরান।

আওয়ামী লীগের হয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন তিন হাজার ৩৬২টি। তাদের মধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন এই দম্পতি।

জানতে চাইলে এডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী বলেন, আমরা স্বামী -স্ত্রী দুজনই আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ কর্মী। সাংগঠনিক কাজের পাশাপাশি আমি দীর্ঘদিন  বিভিন্ন মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে জঙ্গিবাদ, মাদকবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে জনমত তৈরি করেছি। আমি স্কুলজীবন থেকে ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত। আওয়ামী লীগ ছাড়াও সহযোগী ও সামাজিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করছি। মনোনয়ন পেলে তরুণদের কর্মসংস্থান ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করবো। ‘

উল্লেখ্য,  অ্যঅডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী সুচিন্তা ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সদস্য, চট্টগ্রাম চেম্বার অফ কমার্স ও উইমেন্স চেম্বার এন্ড কমার্সের সদস্যের পাশাপাশি ফারমিন গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে পোশাক পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সদস্য হিসেবে কাজ করছেন।

তরুণ সংগঠক, রাজনীতিক ও আইনজীবী জিনাত সোহানা চৌধুরী অনেকের কাছেই ‘আইকন’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন মাদরাসায় অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

ছবি: বার্তা ২৪.কম

করোনাকালীন তাহের নাহার ফাউন্ডেশনের হয়ে ৩৫০টিরও অধিক সেমি পাকা গৃহনির্মাণ করে দিয়েছেন সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে । অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী বাংলাদেশের প্রথম নারী যিনি চট্টগ্রামের শতাধিক মাদ্রাসায় গিয়ে হাজারো শিক্ষার্থীর সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত, জয় বাংলা স্লোগান ধ্বনিত করে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের শুনিয়েছেন মহান মুক্তিযুদ্ধের গল্প। তাদের শপথ করিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার।

ধারাবাহিক কর্মসূচির কারণে সাধারণ মানুষের কাছে ‘অদম্য ও সাহসী সোহানা’ নামে পরিচিতি পান তিনি। কারো বাধা তাকে দমাতে পারেনি। যার স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের হাত থেকে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন সোহানা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নৌকার পক্ষে ছিলো তার নানা রকম উদ্যোগ। চট্টগ্রাম বিভাগজুড়ে নৌকার প্রার্থীদের সমর্থনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভিজুয়্যালি বিএনপি-জামায়াতের ১০০ দিনের হরতালের বর্বরতার চিত্র এবং বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘু নির্যাতনের চিত্র এবং দিন বদলের উন্নয়নের চিত্র, প্রতিটি মানুষের কাছে তুলে ধরেন। নৌকার পক্ষে জনমত সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে তার এসব উদ্যোগ। ফলে আওয়ামী লীগের গ্রামগঞ্জ, শহর ও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় মুখ হয়ে ওঠেন অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী।

শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে প্রথম ফরম সংগ্রহ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় দলটি। দলীয় প্রধানের পর সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পক্ষে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।

প্রথম দিনে মোট এক হাজার ৭৪ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান। শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত চার দিনে আওয়ামী লীগের মোট মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে তিন হাজার ৩৬২টি।