মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি দেশ আছে। তারা অগ্নিসন্ত্রাসের আসামিদের মানবাধিকার নিয়ে চিন্তিত।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় ইতালির রাজধানী রোমে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশে কর্মরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে আয়োজিত এক সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন এলেই একটি দেশ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়। তারা সব সময় মানবাধিকার লঙ্ঘণকারীদের পক্ষে থাকে। যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে লালন করছে, তারাই আবার মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে। তারা বাংলাদেশ নিয়ে খেলা করছে।

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফেরত না দেওয়ার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তাদের ফেরত দেয় না। অর্থাৎ মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের প্রটেকশন (সুরক্ষা) দেওয়া, আর যারা মানবাধিকার সংরক্ষণ করে তাদের বিরুদ্ধে যাওয়া, এটা একটা খেলা আমি দেখতে পাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বিএনপি ঘরানার অনেকেই বিদেশে আছেন। কেউ কেউ অপরাধী। তারা দেশের বাইরে পলাতক হিসেবে আছে। তারাই দেশের নামে বিভিন্নজনের কাছে চিঠি লিখে বদনাম করে বেড়াচ্ছে। নিজেরা দেশের উন্নতি করতে না পারলেও, বিএনপি অপপ্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে, দেশের ক্ষতি করছে।’

দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে জানিয়ে সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে সচেতন থাকতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির চরিত্র অগ্নিসন্ত্রাস। নির্বাচন ঠেকানোর নামে তারা ৫০০ ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছে। ২৯টি ট্রেনে আগুন দিয়েছে। বাস জ্বালিয়েছে, মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। তারা আবার মানবাধিকারের কথা বলে। অথচ আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব- এটা আমাদের স্লোগান। আমরা ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরি করেছি।’

PPP

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি তো নির্বাচনই করেনি। তারা আবার ভোটের অধিকারের কথা বলে। ২০১৮ এর নির্বাচনে তাদের প্রতি আসনে দুই-তিন জন করে দাঁড়িয়েছিল। যে যত টাকা দিয়েছে তাকেই নমিনেশন দিয়েছে। এরপর নিজেদের মধ্যেই গোলমাল। এরপর তারা আবার নির্বাচন বর্জন করল। তাহলে কারচুপির প্রশ্নটা এলো কোথা থেকে?’

মানবতাবোধ আছে বলেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। তারপরও আমাদের কেউ মানবতাবিরোধী বলে কী করে- প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী।

রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাইনি। কূটনীতির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছি। রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে দেখি, কিছু কিছু জায়গা থেকে বাধা আসে। কেন আসে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মিয়ানমারে আরও কাজ করা উচিত। রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়ে সংস্থাগুলো কাজ করুক। রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে হবে।

এ সময় রাষ্ট্রদূতদের বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরার আহ্বান জানান এবং বিদেশি বিনিয়োগ আনতে চেষ্টা চালানোর তাগিদ দেন সরকারপ্রধান।