ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্কে রুশ-ইউক্রেন সংঘাতে এক সপ্তাহে প্রায় ৪ হাজার ৪০০ ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতির আলোচনার আবহে এই তীব্র সংঘাত চলার খবর রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সোমবার (২৫ আগস্ট) জানিয়েছে। ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান লড়াই এখনও সম্পূর্ণ থামেনি, এবং এই সংঘাত পূর্ব ইউক্রেনীয় প্রদেশ লুহানস্কে সবচেয়ে তীব্র আকার ধারণ করেছে।

ছাড়া এ সময়ে ইউক্রেনীয় বাহিনীর ৬টি ট্যাঙ্ক (এর মধ্যে ৩টি লিওপার্ড ট্যাংক), ৫৫টি ফিল্ড আর্টিলারি বন্দুক, একটি মাল্টিপোল লঞ্চ রকেট সিস্টেম (এমএলআরএস), ৪৯টি রেডিও ইলেকট্রানিক এবং কাউন্টার ব্যাটারি ওয়ারফেয়ার স্টেশন, ৯৩টি গোলাবারুদ-জ্বালানি-রসদের ডিপো এবং প্রায় ২৭০টি যুদ্ধযান ধ্বংস করেছে রুশ সেনারা।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহজুড়ে লুহানস্কের কুপিয়ানস্ক স্ভাতোভো-ক্রেমেন্নায়া অঞ্চলে রুশ ও ইউক্রেনীয় সেনাদের মধ্যে তীব্র সংঘাত হয়েছে। তার জেরেই এই প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনীর।

তবে সংঘাতে রাশিয়ার কতজন সেনা নিহত হয়েছেন এবং কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি রুশ বাহিনীর হয়েছে— তা উল্লেখ করা হয়নি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করেছে। ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া এবং ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ইউক্রেনের আবেদনকে কেন্দ্র করে এই অভিযান শুরু হয়। শুরুর ছয় মাসের মধ্যে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া ও খেরসন— ইউক্রেনের চার প্রদেশ রুশ বাহিনীর দখলে চলে আসে। এই চার প্রদেশ মিলিয়ে ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের ১০ শতাংশ।

তবে ইউক্রেনও এই চার প্রদেশ পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করছে। লুহানস্কে রুশ কমান্ডার আন্দ্রিয়ে মোরোচকো জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে ইউক্রেনীয় বাহিনী সামরিক ও বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। যুদ্ধের সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন শান্তি সংলাপের চেষ্টা শুরু করেছে। গত মে মাস থেকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা শান্তি সংলাপে অংশ নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে দুই দেশের কয়েক হাজার যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১৫ আগস্ট ট্রাম্প পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় বৈঠক করেন এবং ১৮ আগস্ট ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তথ্যসূত্র : তাস