সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কারণে ১৪ বছরের বাংলাদেশ এখন তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ ও সমৃদ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছে বলেও জানান তিনি। আজ সোমবার (১২ই ডিসেম্বর) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস ও কুইজ প্রতিযোগীতার পুরস্কার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগামী ৪১ সালে আমরা বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। আর সেই বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে আমরা চলে যাবো।
তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ করার জন্য চারটা ভিত্তি আছে সেটা ঠিক করা হয়েছে। অর্থাৎ এক, আমাদের প্রত্যেকটা সিটিজেন তারা প্রযুক্তির ব্যবহারে দক্ষ হবে- স্মার্ট সিটিজেন। দুই, ইকোনোমি অর্থাৎ সমস্ত ইকোনমিক কার্যক্রম আমরা এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে করবো। তিন, স্মার্ট গভমেন্ট এরই মধ্যে আমরা অনেকটা করে ফেলেছি, সেটাও করে ফেলব এবং চার, আমাদের সমস্ত সমাজটাই হবে স্মার্ট সোসাইটি।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যেমন আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা দিচ্ছি; আমাদের আগামী লক্ষ্য হলো- ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারের পর ২০১০ সালে ২০১০ থেকে ২০২১ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা নিয়ে তারই ভিত্তিতে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমে আমরা কাজ করেছি বলেই আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। ২১ সালে যেটা লক্ষ্য স্থির করেছিলাম সেটা আমরা অর্জন করেছি। এখন আমাদের লক্ষ্য ৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়বো।
২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যানের কথা তুলে ধরে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ থেকে ৪১ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করে দিয়ে গেলাম অর্থাৎ ২১ থেকে ৪১ কিভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন টা কিভাবে হবে তার একটা কাঠামো পরিকল্পনা আমরা প্রণয়ন করে সেটা বাংলাদেশের জনগণের জন্য আমি রেখে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, ২১০০ সালের এ বদ্বীপ-প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন এ বদ্বীপে জলবায়ু অভিঘাত থেকে রক্ষা পায়, দেশ উন্নত হয়, উন্নত দেশে তারা যেন স্বাধীনভাবে সুন্দরভাবে স্মার্টলি বাঁচতে পারে সে ব্যবস্থাটাও করে দিয়ে গেলাম। এখন সব নির্ভর করছে আমাদের ইয়ং জেনারেশনের ওপর। তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের উন্নতি এটাই ছিল আমাদের ১৮ নির্বাচনের ইশতেহার। আমরা সেই কাজটাই করে যাচ্ছি।
মৃত্যুকে পরোয়া করেন না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এখন আমার-ছিয়াত্তর বছর বয়স। যে কোনদিন অক্কা পেতে পারি তাই না; যে কোনোদিন চলে যেতে পারি। তার ওপর গুলি-বোমা-গ্রেনেড হামলা, তারেক জিয়া খালেদা জিয়া তারা আমাকে ছেড়ে দেয়নি। বারবার আমার ওপর হামলা করেছে কিন্তু আমি বেঁচে গেছি; আইভি রহমানকে হারিয়েছে আমাদের বহু নেতাকর্মীকে হারিয়েছি। কিন্তু বারবার তো এ আঘাতগুলো এসেছে আমার ওপর। হয়তো সামনেও আসবে।
তিনি বলেন, আমি এটা নিয়ে পরোয়া করিনি পরোয়া করবো না আমি আমার পরিকল্পনা দিয়ে যাচ্ছি ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান সেটাও করে দিয়ে গেলাম।
বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো সচল আছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যদিও করোনাভাইরাস অতি মারি সেই সঙ্গে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ, আমেরিকা প্রদত্ত স্যাংশন, ইউরোপের স্যাংশন এবং কাউন্টার স্যাংশন যার ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে, গ্রেট ব্রিটেনের মতো দেশও নিজেদের অর্থনৈতিক মন্দার দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। আল্লাহর রহমতে এখনো আমরা আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি।