সাদিক অ্যাগ্রোর ১৫ লাখ টাকার ছাগলকাণ্ডে সমালোচনার তুঙ্গে থাকা যুবক মুশফিকুর রহমান ইফাত রাজস্ব কর্মকর্তা ড. মতিউর রহমানেরই ছেলে। এমনকাণ্ডে মতিউরকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এবার তাকে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় অংশ না নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

রোববার (২৩ জুন) সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. আফজাল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, সোনালী ব্যাংকের ২৩ জুনের বোর্ড সভায় আসতে নিষেধ করা হয়েছে ছাগলকাণ্ডে ভাইরাল হওয়া ও পরবর্তীতে এববিআর থেকে সরিয়ে নেওয়া মতিউর রহমানকে। তিনি কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের প‌রিচালক ছিলেন।

জানা গেছে, বেলা ১১টায় সোনালী ব্যাংকের পর্ষদ চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে মতিউরকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

এদিকে রোববার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এনবিআর সদস্য এবং কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমানকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হলো।

এদিকে, ঈদের ছুটির পর এখনো কর্মস্থলে যোগ দেননি মতিউর রহমান। সকালে ভ্যাট ও কাস্টমস আপিলেট ট্রাইব্যুনালে তাকে পাওয়া যায়নি। কর্মচারীরা জানিয়েছেন, ঈদের ছুটির পর কর্মস্থলে যোগ দেননি মতিউর রহমান।

88

সম্প্রতি কুরবানির জন্য ঢাকার সাদিক এগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকার একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনার জন্ম দেন মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত। তবে শুরুতে ইফাতকে ছেলে হিসেবে অস্বীকার করেন মতিউর রহমান। ছাগল কেনা ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন খামার থেকে ৭০ লাখ টাকার গরু কিনেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
এর পর থেকে মতিউর রহমানের ছেলের দামি ঘড়ি, গাড়ি, আলিশান জীবনযাপন; মতিউর রহমান ও পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলো বাড়ি, জমিসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি থাকার বিষয়ে একের পর এক খবর প্রকাশিত হতে থাকে।

এ বিষয়ে মতিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ইফাত নামে আমার কোনো ছেলে নেই। এমনকি আত্মীয় বা পরিচিতও নন। আমার একমাত্র ছেলের নাম তৌফিকুর রহমান। একটি গোষ্ঠী আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। আমি এ বিষয়ে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সহায়তা চেয়ে আইনি পদক্ষেপে যাচ্ছি। সামাজিক মাধ্যমে আমার ছবি ও নাম ব্যবহার করায় আমি বিব্রত। আমি অবশ্যই আইনি পদক্ষেপে যাব।

তবে ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী জানান, ইফাত তার মামাতো বোনের সন্তান। আর মতিউর রহমানই তার বাবা।