প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর সরকার কঠোর হয়েছে বলেই দুর্নীতিগুলো ধরা পড়ছে। এতে সরকারের ভাবমূর্তি অনুজ্জ্বল হবার কোন কারণ নেই। তিনি বলেছেন, যেখানেই যে দুর্নীতি করবে আপন পর কাউকেই ছাড়বে না সরকার। সরকার কঠোর হয়েছে বলেই দুর্নীতির জঞ্জাল সাফ হচ্ছে। তিনি বিকালে রাজধানীর গণভবনে তাঁর সাম্প্রতিক চীন সফর উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন।
বিসিএস প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আমলে তাদের অনুগতদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে বিসিএস পাশ করা হতো, তখন কোন উচ্চবাচ্য হতো না। তখন অনিয়ম করে চাকরি পাওয়াদের আমরা সরিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলনের পরে তারা নানা কারসাজিতে আবার জায়গা করে নেয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা প্রশ্নফাঁস করেছে তারা যেমন অপরাধী, তেমনই যারা সেগুলো কিনেছে তারাও দুর্নীতিবাজ। যারা অনিয়ম করে সরকারি চাকরি পেয়েছে তাদের খুঁজে পেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের বেনিফিসিয়ারিদের খুঁজে বের করা গেলে তাদের চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হবে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনমনীয় থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হাত যখন দিয়েছি আমি ছাড়বো না। জিরো টলারেন্স মানে জিরো টলারেন্স।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘ড্রাইভার কীভাবে এত কোটি কোটি টাকার মালিক হলো, সেটা কীভাবে বলবো। তাদের অপকর্ম আমরা ধরছি বলেই তো এখন জানতে পারছেন। এতদিন তো আপনারা জানতে পারেননি। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রথমে আমরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। এখন জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে, তাদের থামিয়েছি। এখন আমরা দুর্নীতি নিয়ে কাজ করছি। দুর্নীতবাজদের ধরছি। এটা চলতে থাকবে। ’
তিনি বলেন, ‘অনেকে আমাকে বলেন, এটা করলে সরকারের ইমেজ নষ্ট হবে। আমি সেটা মনে করি না। যারা অপরাধ করছে, দুর্নীতিতে জড়াচ্ছে; তাদের ধরতে হবে। এ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে না। ’
সরকারি চাকরিতে বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা সুবিধা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-নাতনিরা কোটা সুবিধা পাবে? এমন প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিরা কোটা পাবে? তা তো আমরা দিতে পারি না। ’
প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন তোলেন মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে দেশ স্বাধীন না করলে আজ পাকিস্তানিদের বুটের লাথি খেতে হতো।