প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কন্যাশিশুদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, শিক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ তথ্য-প্রযুক্তিতে এগিয়ে থাকার লক্ষ্যে উন্নত বিশ্বের সুদক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর।

আজ শনিবার জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২৩ উপলক্ষে গতকাল দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, বিনিয়োগে অগ্রাধিকার, কন্যাশিশুর অধিকার’-এ প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশব্যাপী জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২৩ উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের সব কন্যাশিশুকে প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক স্নেহ ও ভালোবাসা জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হচ্ছে কন্যাশিশু। নারী ও কন্যাশিশুর মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি বাংলাদেশ এখন জেন্ডার সমতায় সারা বিশ্বে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার গত সাড়ে ১৪ বছর ধরে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আসছে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি নারী ও কন্যাশিশুদের উন্নয়নে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে জেন্ডার সম্পৃক্ত বরাদ্দের পরিমাণ ২ লাখ ৬১ হাজার ৭ শত ৮৭ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং জিডিপি’র ৫ দশমিক ২৩ শতাংশ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাজেটে ২৭টি মন্ত্রণালয় ও ১৭টি বিভাগের জন্য পৃথক জেন্ডার বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে, যা নারী ও কন্যাশিশুদের সার্বিক অধিকার রক্ষায় ব্যবহৃত হবে।’

কন্যাশিশুদের কল্যাণে অবৈতনিক শিক্ষার প্রচলন, উপবৃত্তি প্রবর্তন, বিনামূল্যে বই বিতরণ, নারী শিক্ষকদের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় শিশুনীতি-২০১১ ও জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ প্রণয়ন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধিত) আইন-২০২০ এবং যুগোপযোগী বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। আমাদের গৃহীত এসব পদক্ষেপের ফলে বিদ্যালয়ে ছাত্রী ভর্তির হার বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাল্যবিবাহ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ক্রীড়াঙ্গনেও আমাদের মেয়েরা ঈর্ষণীয় সাফল্য প্রদর্শন করছে। এর মূল কারণ কন্যাশিশুর প্রতিভা বিকাশে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের উপযুক্ত সুযোগ সৃষ্টি, তাদের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও পৃষ্ঠপোষকতা।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, কন্যাশিশুদের বিকশিত হওয়ার প্রতিটি পদক্ষেপে এবং তথ্য-প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তাহলে তারা যোগ্য ও দক্ষ নাগরিক হয়ে উঠবে এবং আগামীর উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের ক্ষেত্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী ‘জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২৩’ এর সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।