ইউরোপে করোনা ভাইরাসের আরেকটি ঢেউয়ের আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ডাব্লিউএইচও’র ইউরোপীয় অঞ্চলিক কর্মকর্তারা জানান, এই মহাদেশে আবারও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে আগের তুলনায় শনাক্তের হার বেড়েছে ৮ শতাংশ। টিকা নিতে অনীহার কারণে এ অবস্থা বলে জানিয়েছেন সেখানকার বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার এক বিবৃতিতে ডব্লিউএইচওর ইউরোপ শাখা কার্যালয়ের পরিচালক হ্যান্স ক্লাগ ও ইসিডিসি পরিচালক আন্দ্রেয়া আমন বলেন, এক বছর আগে আমরা যে ঝুঁকিতে ছিলাম, এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। তবে এটা পরিষ্কার যে, করোনা মহামারী এখনো পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়নি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা লক্ষ করছি, ইউরোপে ফের এই রোগের দৈনিক সংক্রমণ বাড়ছে। মনে হচ্ছে শিগগিরই করোনার আরেকটি ঢেউ আসার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। আসন্ন শীতেই আসতে পারে এই ঢেউ।
এদিকে সম্প্রতি ইউরোপের ছয়টি অঞ্চলের সাপ্তাহিক সংক্রমণ পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ডব্লিউএইচও। সেখানে দেখা গেছে- বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে দৈনিক ও সাপ্তাহিক সংক্রমণ স্থিতিশীল থাকলেও ইউরোপের পরিস্থিতি ভিন্ন। গত সপ্তাহে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে করোনা সংক্রমণ ৮ শতাংশ বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
ইউরোপ মহাদেশভুক্ত বেশিরভাগ দেশেই করোনার টিকা খুবই সহজলভ্য; কিন্তু জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বছর গণটিকাদান কার্যক্রমের শুরু থেকেই টিকা নেওয়ার ব্যাপারে অনীহা ছিল ইউরোপের জনগণের একটি বড় অংশের মধ্যে। সেই অনীহা এখনো রয়েছে। এখনো ইউরোপের লাখ লাখ মানুষ করোনা টিকার একটি ডোজও নেননি। বিবৃতিতে ইউরোপের জনগণকে অবিলম্বে টিকা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয় ডব্লিউএইচও ও ইসিডিসির পক্ষ থেকে। খবর আল জাজিরার।
এদিকে, বিশ্বজুড়ে করোনার প্রভাবে অন্তত এক কোটি মানুষের জীবনযাত্রা, স্বাস্থ্য সেবা ও অর্থনীতি ‘বিপর্যস্ত’ হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস। এজন্য এই সংকট সমাধানে বিশ্বের সকল দেশের প্রতি যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও এক হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় চার লাখে। এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬০ কোটিরও বেশি মানুষ।