সারাদেশে ১১টি বোর্ডের অধীনে একযোগে আগামী ২৬ জুন শুরু হতে যাচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা। পরীক্ষা উপলক্ষে উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছেছে প্রশ্ন এবং উত্তরপত্র। অন্যদিকে সারাদেশে করোনাভাইরাস ও ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

অভিভাবকরা জানান, করোনা সংক্রমণ নিয়মিত বাড়ছে। এটি নিয়ন্ত্রণ করা না হলে পরীক্ষার কেন্দ্রে আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। তাই বিকল্প ব্যবস্থা রাখা এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় রুটিন পরিবর্তনের দাবি জানান তারা।

পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শঙ্কা থাকলেও পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে শুরু করা হবে। সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে একাধিক বিকল্পও ভেবে রাখা হচ্ছে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্যমতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত সারাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৫৩ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। অন্যদিকে একই সময়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৫৭০ জন এবং মারা গেছেন ২৮ জন। গত কয়েকদিনে ডেঙ্গুর পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ২৬ জুন সারাদেশের ৯ হাজার ৩১৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় বসতে যাচ্ছে। পরীক্ষা হবে ২ হাজার ৭৯৭ কেন্দ্রে। তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে ১০ আগস্ট। এরপর ব্যবহারিক পরীক্ষা ১১ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।

ঢাকার বাসিন্দা ও এইচএসসি পরিক্ষার্থীর অভিভাবক কাসেম আহমেদ বলেন, ঢাকা এমনিতেই ঘনবসতিপূর্ণ শহর। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা না হলে দ্রুত ভয়াবহরূপ ধারণ করতে পারে। ফলে সব দিক বিবেচনায় এইচএসসি’র রুটিন পরিবর্তন করার প্রয়োজন হলে সেই বিকল্প ব্যবস্থা যাতে থাকে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা তরুণ। তাদের শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই হবে। হাত ধোয়া, জনসমাগম এড়িয়ে চলা ও মাস্ক পরলেই চলবে।

১১টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা জানিয়েছেন, করোনা ও ডেঙ্গু সংক্রমণ নিয়ে শঙ্কা থাকলেও তারা নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা শুরু করবেন। উচ্চ মাধ্যমিকে বিষয় বেশি থাকায় পরীক্ষা নিতে সময় লাগে। নির্ধারিত সূচির বাইরে গিয়ে পরীক্ষার ক্ষেত্রে আপাতত কোনো বিকল্প হাতে নেই।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, ডেঙ্গু এবং করোনা নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় রয়েছি। অভিভাবকরাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নানা শঙ্কার কথা জানাচ্ছেন। তবে আমাদের হাতে পরীক্ষা শুরু করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।