বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলাসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (১৪ই নভেম্বর) দুপুরে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়সহ জাতীয় নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। পরে বিস্তারিত না বললেও নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট, বিশেষ করে মানবাধিকার, আমাদের নির্বাচন, আইনের শাসন ও জনজীবনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব বিষয় নিয়ে কথা বলেছি।’
খসরু বলেন, ‘কানাডা মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, জনজীবনের নিরাপত্তা, আইনের শাসন ও সুশাসনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। কানাডা ও অন্যান্য কিছু দেশ সব সময় এই বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেয়।’
তিনি বলেন, কানাডা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ সরকারকে দ্বিপাক্ষিকভাবে বলে আসছে যে এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
বাংলাদেশের জনগণ, গণতান্ত্রিক দেশ, বহুপাক্ষিক সংস্থা ও সারা বিশ্বের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতো কানাডাও অনেক বিষয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ, তারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে গুরুত্ব দেয়।
পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে কানাডা কী বলেছে জানতে চাইলে খসরু বলেন, তারা ভেতরে কী আলোচনা করেছেন, তা তিনি বিস্তারিত বলতে পারবেন না।
‘আমরা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কিত সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। তবে আমরা কী আলোচনা করেছি, তা বিশদভাবে বলার সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপির পরবর্তী নির্বাচনে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। বিএনপি এ অবস্থানে কঠোর।
তিনি বলেন, একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকারকে হটিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেখানে জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।
‘আওয়ামী লীগ, নির্বাচন কমিশন ও অন্যরা পরবর্তী নির্বাচন সম্পর্কে কী বলবে, তা নিয়ে আমরা কম চিন্তিত।’
খসরু বলেন, বাংলাদেশ ও কানাডা দীর্ঘ দিন ধরে বৈচিত্র্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে আসছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কানাডায় প্রায় দুই বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করে। কারণ, ২০০৩ সালে বিএনপি সরকারের আমলে দেশটি বেশিরভাগ পণ্যের জন্য বাংলাদেশকে কানাডার বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়েছিল।’
এছাড়া বিএনপির নেতা বলেন, গম, ডালসহ অনেক প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য আমদানির জন্য কানাডা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য।
‘কানাডা এখন আমাদের বাচ্চাদের পড়াশোনার জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে।’
‘কানাডায় অনেক বাংলাদেশী বসবাস করছে এবং তারা সে দেশের অর্থনীতি ও সমাজে অবদান রাখছে।’