অবশেষে যুক্তরাজ্যের কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। সোমবার (২৪ জুন) তিনি কারামুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজ দেশ অস্ট্রেলিয়ার বিমানে উঠেন। এর মাধ্যমে দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে তিনি নিজ দেশে ফিরতে পারলেন। তবে এখানেই যুক্তরাষ্ট্র তার পিছু ছাড়ছে না।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, এক্স-এ বার্তা দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে উইকিলিকস। তাতে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের অত্যন্ত সুরক্ষিত বেলমার্শ কারাগার থেকে অ্যাসাঞ্জ মুক্ত হয়ে লন্ডনের স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরে ছুটে যান। সেখানে তার জন্য ফ্লাইট নির্ধারিত ছিল।

অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরক্ষা-সংক্রান্ত তথ্য ফাঁসের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ এনেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ফৌজদারি অপরাধের দোষ স্বীকার করতে সম্মত হয়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তিতে পৗঁছেনোয় অ্যাসাঞ্জকে কারামুক্তি দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে উইকিলিকস বলেছে, ‘জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ মুক্ত।’ সোমবার জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ বালমার্স কারাগার থেকে ছাড়া পেয়েছেন। ১ হাজার ৯০১ দিন তিনি এ কারাগারে বন্দি ছিলেন।

স্থানীয় সময় বুধবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছনোর কথা অ্যাসাঞ্জের। এ সপ্তাহেই মার্কিন আদালতে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে তার। মার্কিন আদালতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হবেন। তবে তার সাজা কমে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। ব্রিটেনের কারাগারে এরই মধ্যে সেই ৫ বছর কাটিয়ে এসেছেন তিনি।

সিবিএস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর গোপন নথিপত্র ও কূটনৈতিক বার্তা ফাঁসের অভিযোগে একক অপরাধী হিসেবে দোষ স্বীকার করতে সম্মত হয়েছে। সমঝোতা চুক্তির শর্ত মতে অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে থাকতে হবে না। এমনকি যুক্তরাজ্যের কারাগারে থাকার সময়কালকে তার সাজা ভোগের সময় হিসেবেও বিবেচনা করা হবে।

২০০৬ সালে উইকিলিকস চালু করেন অ্যাসাঞ্জ। এতে তিনি একের পর এক গোপন মার্কিন নথিপত্র প্রকাশ করতে থাকেন। ২০১০ ও ২০১১ সালে ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ গোপন সামরিক-কূটনৈতিক নথি ফাঁস করেছিলো। এসব তথ্য পরে বিশ্ব গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ ঘটনায় অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ১৮টি মামলার তদন্ত করছে মার্কিন বিচার বিভাগ। এ কারণে বিব্রত যুক্তরাষ্ট্র তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়। এরপর থেকে গ্রেফতার এড়াতে সাত বছর ধরে যুক্তরাজ্যের ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। সেখান থেকে ২০২০ সালের ১১ এপ্রিল তাকে গ্রেফতার করে লন্ডন পুলিশ।