আগামীকাল (শুক্রবার) টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হচ্ছে তাবলীগ জামাতের ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমা। এই আয়োজনে অংশ নিতে গতকাল (বুধবার) থেকেই দেশি-বিদেশি মুসল্লিদের ঢল নেমেছে ইজতেমা ময়দানে। ইতিমধ্যে ইজতেমা আয়োজনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক। ইজতেমা ঘিরে ১০ হাজারের অধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

এরই মধ্যে ইজতেমা ময়দানের সামিয়ানার নিচে নিজ নিজ জেলার নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান নিয়েছেন মুসল্লিরা। শুক্রবার প্রথম পর্বের তিন দিনব্যাপী আয়োজনে থাকছে তাবলিগ জামাতের আলমি শূরা (জুবায়েরপন্থি)। মাঝে চার দিন বিরতির পর সা’দপন্থিদের তত্ত্বাবধানে আগামী ২০শে জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা। আগামী ২২শে জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা।

ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে টঙ্গীর তুরাগ তীর। আশপাশের এলাকায়ও লোকে লোকারণ্য হয়ে গেছে। ইজতেমাকে কেন্দ্র করে টঙ্গীতে মানুষের চাপ বাড়তে থাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশপাশের সব রুটে ক্রমেই বাড়ছে যানজট। করোনার বিধিনিষেধ কেটে যাওয়ায় এবং তাবলীগ জামাতের দুই গ্রুপের বিরোধ শিথিল হয়ে যাওয়ায় দুই বছর পর অনুষ্ঠিতব্য এ ইজতেমায় অতীতের তুলনায় অধিক মুসল্লি সমাগম হবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও বিদেশ থেকে তাবলিগ অনুসারী ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মালসামানা নিয়ে ময়দানে জড়ো হয়েছেন।

টঙ্গী-আশুলিয়া সড়ক থেকে ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের অবাধ প্রবেশ নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা তুরাগ নদে পাঁচটি ভাসমান সেতু স্থাপন করেছেন। ১৬০ একর ময়দানের ওপর নির্মিত সুবিশাল প্যান্ডেলের কাজ, খুঁটিতে নম্বর প্লেট, খিত্তা নম্বর, জুড়নেওয়ালি জামাতের কামরা, মুকাব্বির মঞ্চ, বয়ান মঞ্চ, তাশকিল কামরা, বধির সাথীদের জন্য বিশেষ কামরা, পাহারা ও এস্তেকবালের জামাত তৈরি, হালকা নম্বর বসানোর কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে।

ইজতেমা ময়দানে জায়গা না হওয়ায় তুরাগ নদের পশ্চিম পাশের তীরে (ঢাকা-আশুলিয়া সড়ক সংলগ্ন) ও উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসপি) ট্রেনিং সেন্টার সংলগ্ন এলাকায় তাঁবু টানিয়ে মুসল্লিরা অবস্থান নিয়েছেন।

টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, আইজিপির নির্দেশে এবং জিএমপি কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম স্যারের নেতৃত্বে বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে টঙ্গীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক গোয়েন্দা পুলিশ কাজ করছে। বিশ্ব ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তা বিধানে ময়দানের চারপাশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পর্যাপ্ত পরিমাণে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।