ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে রাশিয়ার ৬০ মাইল দীর্ঘ সেই সেনা বহর। কিয়েভ অভিমুখে যাত্রা করা রাশিয়ার এই সামরিক বহর গত তিন দিনেও শহরটিতে পৌঁছাতে পারেনি। কিয়েভ ও অন্যান্য শহরে ইউক্রেনীয় সৈন্য এবং সাধারণ জনগণের প্রচণ্ড প্রতিরোধের মুখে তাদের অগ্রযাত্রা কিছুটা থমকে গেছে বলে ব্রিটিশ সামরিক গোয়েন্দারা জানিয়েছেন।

মস্কো কৃষ্ণ সাগরের বন্দরনগরী খেরসন দখলে নেওয়ার পরদিন ব্রিটিশ গোয়েন্দারা বলেছেন, কিয়েভের দিকে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অগ্রযাত্রার গতি অনেক কমে গেছে। ইউক্রেনীয় বাহিনী এখনও খারকিভ এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি শহরে রুশ আক্রমণের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ১৯৪৫ সালের পর ইউরোপীয় কোনো রাষ্ট্রে সবচেয়ে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেওয়ার পর ইউক্রেনে রুশ সৈন্যরা ব্যাপক রক্তক্ষয়ী অভিযান শুরু করেছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই যুদ্ধে ইউক্রেনে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি এবং ১০ লাখের বেশি মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। তবে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী এখনও কিয়েভের ক্ষমতাসীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার হালনাগাদ গোয়েন্দা তথ্যে ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ইউক্রেনীয়দের প্রতিরোধ, ভঙ্গুর রুশ কৌশল এবং যানজটের কারণে রাশিয়ার সামরিক বহরের প্রধান অংশটি এখনও কিয়েভ থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। কিয়েভে প্রবেশের ব্যাপক প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে রুশ এই বহর।

এতে বলা হয়েছে, গত তিন দিনে এই বহর খুব বেশি দূর অগ্রসর হতে পারেনি। রাশিয়ার তীব্র গোলাবর্ষণ সত্ত্বেও খারকিভ, চেরনিহিভ এবং মারিউপোল এখনও ইউক্রেনীয়দের হাতে রয়েছে।

কিয়েভের ৫৮ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমের বোরোদিয়ানকার একজন বাসিন্দা শত্রুপক্ষের সঙ্গে তাদের শ্বাসরুদ্ধকর গোলাগুলির বর্ণনা দিয়েছেন রয়টার্সকে। রয়টার্সের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রুশ গোলার আঘাতে ভবনগুলো ধ্বংস হয়েছে, সড়কে সড়কে আগুন জ্বলছে এবং সামরিক যানবাহন ধ্বংস হয়ে গেছে।

নাম প্রকাশ না করে ইউক্রেনের এক নাগরিক বলেন, বোরোদিয়ানকার কেন্দ্রের একটি ডাকঘরের সামনের পার্কে রাশিয়ার সৈন্যরা তাদের বিএমপি গাড়ি (সামরিক যান) থেকে অনবরত গুলি ছুড়ছে। তিনি বলেন, ‘তারপর এই জারজরা ট্যাংক চালিয়ে দিয়েছে এবং ইতোমধ্যে আগুনে পুড়ে যাওয়া সুপারমার্কেটে গোলাবর্ষণ শুরু করেছে। এতে আবারও আগুন ধরে যায়।’