কুশিয়ারা নদীর ১৫৩ কিউসেক পানিবণ্টনে অনুমোদন দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বুধবার (২৮শে সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হলে এতে অনুমোদন দেন মন্ত্রীসভার সদস্যরা। গত ৬ই সেপ্টেম্বর দিলি­র হায়দারাবাদ হাউজে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ১৫৩ কিউসেক করে কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টন সম্পর্কিত সমঝোতা চুক্তিটি সই হয়েছিলো। এসময়ে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তি অনুযায়ী শুকনো মৌসুমে অর্থাৎ পহেলা নভেম্বর থেকে ৩১শে মে ভারতের আসামে ওই নদী থেকে ১৫৩ কিউসেক পানি ব্যবহার করতে পারবে। অন্যদিকে বাংলাদেশও তার অভ্যন্তরীণ প্রয়োজন মেটাতে সমপরিমাণ পানি কুশিয়ারা নদী থেকে সংগ্রহ করতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৬ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লি সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় এবং একান্ত বৈঠক করেন। ওইদিন ভারত প্রজাতন্ত্রের জলশক্তি মন্ত্রনালয় এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জলসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে প্রতিটি ১৫৩ কিউসেক পানি উত্তোলনের বিষয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। এই সমঝোতা স্মারকটি আসাম সরকারকে সমঝোতা স্মারকটি শুষ্ক মৌসুমে (১ নভেম্বর-৩১ মে) কুশিয়ারা নদীর সাধারণ অংশ থেকে ১৫৩ কিউসেক পর্যন্ত পানি উত্তোলন করতে সক্ষম করবে। এছাড়াও দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক ইস্যুতে সাতটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এর পর দিন ৭ সেপ্টেম্বর যৌথ বিবরণী প্রকাশ করা হয়। যৌথ বিবরণীতে দুই পক্ষের পানি সহযোগিতা ইস্যুতে বলা হয়, ভারতের ফেনী নদীর অনুরোধ বাংলাদেশ বিবেচনায় নিয়েছে। কুশিয়ারা নদীর পানি উত্তোলনের জন্য সমঝোতা স্মারক সই করার বিষয়টিকে দুই নেতা স্বাগত জানান। এর ফলে বাংলাদেশ সেচ সুবিধা পাবে এবং দক্ষিণ আসামে পানি প্রকল্পগুলোকে সহায়তা দেবে। পানি ব্যবস্থাপনার ব্যাপ্তি বাড়াতে যৌথ নদী কমিশনের সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেন দুই নেতা।

যৌথ নদী কমিশনের স্থায়ী সদস্য মাহমুদুর রহমান বুধবার সময়ের আলোকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কুশিয়ারা নদী থেকে পানি উত্তোলনের বিষয়ে নিষ্পত্তি হওয়ায় এখন আর কোনো সমস্যা নেই। এখনও বর্ষাকাল চলমান এবং কুশিয়ারা নদীর পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি। তাই এখনই পানি উত্তোলন করা যাচ্ছে না।’ এ নদী থেকে পানি উত্তোলন কবে নাগাদ শুরু হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পানি উত্তোলনের আগে প্রস্তুতি শেষ করতে হবে। তার জন্য নদী থেকে উত্তোলন করা পানি যে খাল দিয়ে আসবে তার মুখের বাঁধ কাটতে হবে। খালের মুখের বাঁধ কাটার আগে কূটনৈতিক চ্যানেলে তা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে জানানো হবে। আশা করছি, সব প্রস্তুতি শেষে সামনের নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে পানি উত্তোলন করা সম্ভব হবে।’