কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষে অন্তত ৪ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। ছাত্রলীগের সঙ্গে কোটা আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া আর দফায় দফায় সংঘর্ষে সোমবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত উত্তপ্ত ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মঙ্গলবারও (১৬ জুলাই) পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচি দিয়েছে দুই পক্ষ। এ নিয়ে চাপা উত্তেজনা আছে ক্যাম্পাসগুলোসহ সারাদেশে।
চট্টগ্রামে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ই জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় মুরাদপুর-ষোলশহর এলাকায় দুইপক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে একজন চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী এবং অন্যজন পথচারী ।
নিহত শিক্ষার্থীর নাম ওয়াসিম আকরাম (২৩) ও পথচারীর মো. ফারুক (৩৩)। দুজনের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে আবু সাঈদ নামের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। সাঈদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলো। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে বেরোবিতে অন্যতম সমন্বয়ক ছিলো আবু সাঈদ।
দুপুরে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় গেটে জড়ো হলে তাদের ওপর রাবার বুলেট ও গুলি চালায় পুলিশ। এতে আবুদ সাঈদ নামের ওই শিক্ষার্থী নিহত হয়। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার উত্তম কুমার পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রংপুর খামার মোড় থেকে শিক্ষার্থীরা বিশাল মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং ফটকের সামনে আসে। এ সময় তারা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। এরপর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে বাধা দেয় পুলিশ, শুরু হয় সংঘর্ষ। পুলিশ প্রায় ২০০ রাউন্ড গুলি ও রাবার বুলেট ছোড়ে। শিক্ষার্থীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়।
এদিকে, রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় এক যুবক নিহত হয়েছেন। নিহতের আনুমানিক বয়স ২৫। তিনি একজন হকার।
মঙ্গলবার (১৬ই জুলাই) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ।
তিনি জানান, রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ চলছিল। এমন সময় ওই ব্যক্তি কোটা আন্দোলনকারীদের সামনে পড়ে যাওয়ায় হামলার শিকার হন। এরপর তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।