দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট খেলে লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় বলার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন সাকিব আল হাসান। সেই অনুসারে তাকে নিয়েই স্কোয়াড ঘোষণা করেছিল বিসিবি। আমেরিকা থেকে দেশের উদ্দেশে রওনাও করেছিলেন সাকিব। কিন্তু দুবাই আসার পর ঘটল বিপত্তি। বিক্ষুব্ধদের আন্দোলনের মুখে তাকে ঢাকায় ফিরতে নিরুৎসাহিত করেন বিসিবি সভাপতি।

দুপুর ২টা নাগাদ সাকিববিরোধীদের স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছিল স্টেডিয়ামের আশপাশের এলাকা। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিল আন্দোলনকারী জনতা।

এ ছাড়াও ২১ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া মিরপুর টেস্টের স্কোয়াড থেকে সাকিবকে বাদ দেওয়ার দাবি তুলেছে আন্দোলনকারীরা। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের উদ্দেশ্যে দেওয়া স্মারকলিপিতে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা বলছে, গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্র বিনির্মাণের লক্ষ্যে সকল জায়গায় যে পরিবর্তন হয়েছে তার অংশ আপনি নিজে। যদি এই গণঅভ্যুত্থান না হতো, তাহলে আপনি বিসিবি প্রধান হতেন না।

‘তাই আপনার প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিৎ ফ্যাসিবাদ নির্মূল করে নিজের প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করা। আপনি কোনোভাবেই তাই ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন করতে পারেন না। আপনি পারেন না বাংলাদেশের জার্সি একজন ভোটচোর এমপির গায়ে জড়িয়ে দিতে। এই কাজের মাধ্যমে আপনি কেবলমাত্র পতিত স্বৈরাচারের মন্ত্রী ও সাবেক বিসিবি প্রধান পাপনের প্রতিজ্ঞা পূরণ করতে যাচ্ছেন।’

আজ রাত ১১টার পর তার ঢাকায় পৌঁছার কথা। তাই এমনিতেই দীর্ঘ সময় তাকে দুবাই অবস্থান করতে হচ্ছে। কিন্তু দুবাইয়ে অবস্থান করার সময়ে তাকে এখনই ঢাকায় আসতে মানা করা হয়েছে।

জানা গেছে, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এই ফ্লাইটে সাকিবকে চড়তে নিষেধ করা হয়েছে। সরকারের সবুজ সংকেত পেলেই তিনি দেশে ফেরার বিমান ধরতে পারবেন। সাকিবও আপাতত সংশয় নিয়ে অপেক্ষা করছেন সবুজ সংকেতের। এরই মাঝে নিরাপত্তা শঙ্কা থাকায় সিদ্ধান্ত বদলিয়েছে টাইগার এই অলরাউন্ডার।

ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোর এক প্রতিবেদনে এমনটায় জানায় সাকিব। সাকিব বলেন, আপাতত দেশে ফেরা হচ্ছে না। পরবর্তী গন্তব্যের বিষয়েও নিশ্চিত নয়। তবে আপতত দুবাইতেই অবস্থান করছেন তিনি।

ক্রিকেটের পাশেও রাজনীতিতেও আওয়ামীলিগ সরকারে নাম লেখিয়েছিলেন টাইগার এই অলরাউন্ডার। যার ফলে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে তার নামের পাশে যোগ হয় হত্যা মামলা। যার জন্য শঙ্কা ছিলো তার দেশে আসা নিয়ে। এর মাঝে বিসিবি ও বর্তমান সরকার সবুজ সংকেত দিলে দেশে আশার জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাই এসেই নিরপত্তা ইস্যুতে ফের চলে যেতে হচ্ছে তাকে!

সাকিব কানপুর থেকে টেস্টকে বিদায় বলার সময় দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ দিয়ে অবসরের যাওয়ার জন্য বলে থাকেন। সাকিবের ইচ্ছাপূরণে বেশ আন্তরিকতা দেখিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু গত কয়েক দিন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সাকিবের বিরুদ্ধে কিছু মানুষ মানববন্ধন, মিছিলসহ নানা কর্মসূচি করেছে। পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও তার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে।

তার বিরুদ্ধে একটি পক্ষের আজ বিসিবিতে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা। এসব ঘটনাপ্রবাহের মাঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানোর আগপর্যন্ত সাকিবকে দুবাইয়ে অবস্থান করতে বলা হয়।