আসন্ন কুরবানির ঈদে রাজধানীর আফতাবনগর আবাসিক এলাকায় পশুর হাট বসানোর ইজারা বিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে আসন্ন কুরবানির ঈদে আফতাবনগরে গরুর হাট বসানো যাবে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। রোববার (৪ মে) বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ।

এর আগে গত ২৫ এপ্রিল রাজধানীর আফতাবনগর আবাসিক এলাকায় কুরবানির পশুর হাট বসানোর ইজারা বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনূস আলী আকন্দ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন।

এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ঈদ উপলক্ষে রাজধানীতে পশুর হাট বসানোর জন্য ইজারার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন গত ২১ এপ্রিল। বিজ্ঞপ্তিতে ১১টি হাটের তালিকা ছিল, যার একটি ছিল আফতাবনগর। এ অবস্থায় আফতাবনগরে পশুর হাট বসানো বন্ধ চেয়ে ২৪ এপ্রিল হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।

রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং দক্ষিণ সিটির প্রধান ভূমি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

রিটকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ জানান, আফতাবনগর একটি পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা, যেটি রাজউকের অনুমোদিত। এখানে বিচারপতি, পেশাজীবী ও বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ বসবাস করেন। প্রায় সাত হাজার প্লট নিয়ে গঠিত এই এলাকায় বহুতল ভবন ও পরিবারসমূহের বাস রয়েছে। এমন একটি ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকায় পশুর হাট বসালে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছাবে।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩(২) ও প্রথম তফসিল অনুযায়ী আফতাবনগর মূলত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত, যা বাড্ডা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত এলাকা। সেই হিসেবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওই এলাকায় হাট বসানোর এখতিয়ার নেই।

আইনজীবী আরও জানান, ২০২৩ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ইজারা বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধেও রিট হয়েছিল। তখন হাইকোর্ট হাট বসানোর ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে আপিল বিভাগের অনুমতিতে শুধু এল ব্লকের পরবর্তী অংশে হাট বসানো হয়েছিল, কিন্তু এ থেকে এইচ ব্লক পর্যন্ত হাট বসেনি।

আদালতের চলতি বছরের রায়ের ফলে এবার পুরো আফতাবনগর এলাকাতেই হাট বসানো বন্ধ থাকছে। এই এলাকায় পশুর হাট বসলে পুরো আবাসিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা।