প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ কোনোদিন গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ছাড়া সরকার গঠন করেনি। জনগণ যেন তার ভোটের অধিকার সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করতে পারে সেজন্য নির্বাচনী আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন, স্বচ্ছ ব্যালটবাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে যতগুলো সংস্কার সব আমরা করেছি।

সোমবার (১৪ নভেম্বর) গণভবন থেকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আওয়ামী লীগের প্রস্তাবেই সবকিছুর সংস্কার করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণের ভোটেই বাবরবার নির্বাচিত হয়ে এসেছি। দীর্ঘসময় সরকারে থাকার কারণেই আমরা যেভাবে উন্নয়ন পরিকল্পনা করেছিলাম সেভাবে করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে দেখে এখন আর কেউ বলতে পারবে না এদেশ দরিদ্র দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ, হাত পেতে চলার দেশ। আমরা এখন একটা মর্যাদাশীল দেশে পরিণত হয়েছি। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল।

দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান জাতির পিতার হত্যাকারীদেরকে ইনডেমনিটি জারি করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে। বিচারের হাত থেকে তাদেরকে মুক্ত রাখে। যুদ্ধাপরাধী, নারী ধর্ষণকারী, লুটপাটকারী, গণহত্যাকারী, অগ্নিসংযোগকারী, যেসব যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু হয়েছিল তাদেরকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়। যারা স্বাধীন বাংলাদেশ চায়নি, পাসপোর্ট নিয়ে পাকিস্তানে চলে গিয়েছিল তাদেরকেও ফিরিয়ে এনে ক্ষমতায় বসায়।

তিনি বলেন, ভোট চুরির যে কালচার, ডাকাতির যে কালচার, সেই কালচার তারা (বিএনপি) শুরু করে। আমি ধন্যবাদ জানাই উচ্চ আদালতকে, অবৈধ ক্ষমতার দখলকে অবৈধ ঘোষণা করার জন্য।

নির্বাচন ঘনিয়ে এসেছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, হয়তো দুই একদিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তারিখ সময় ঘোষণা দেবে।

আজকে আমরা ডিজিটাল মাধ্যমে বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন করছি। এর পেছনে একটা কারণ আছে। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমরা জনগণের জন্য অনেক কাজ করেছি। খুলনার রূপসা ব্রিজ থেকে শুরু করে কুড়িগ্রামের ধরলা ব্রিজ, দক্ষিণাঞ্চলের গাবখান ব্রিজ—এমন অনেক কাজ আমরা করেছি। স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসা অনেক কিছু করেছিলাম, কিন্তু তখন সবগুলোর উদ্বোধন করতে পারিনি। ২০০১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার একমাসের মাথায় গাবখান ব্রিজ উদ্বোধন করার সময় বলেছিলেন, আমরা নাকি কোনো কাজ করিনি। তার মানে এতো বড় একটি নদীতে তিনি এক মাসে বড় একটি ব্রিজ তৈরি করে ফেলেছিলেন….।

সরকারপ্রধান বলেন, এবার আমরা যেটুকু কাজ করেছি সেটুকু উদ্বোধন করব। এরপর যখন নির্বাচন হবে জনগণ যদি নৌকা মার্কায় ভোট দেয় আমরা আবারও ক্ষমতায় আসব। আর ভোট না দিলে আমার কোনো আফসোস থাকবে না। কারণ, আমি তো দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় নিয়ে এসেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার আমরাই নিশ্চিত করেছি। কাজেই জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দেবে। অনেকে নির্বাচনে আসতে চায় না। কারণ, যারা মাত্র ৩০টি সিট পেয়েছিল, তাদের তো নির্বাচনে আসার আকাঙ্ক্ষাই থাকবে না। বরং নির্বাচন বানচাল করে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আবারও বাংলাদেশের মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলাই তাদের চেষ্টা। দেশের মানুষ যখন শান্তি ও স্বস্তিতে ছিল, দেশের উন্নয়ন দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক সেইসময় আবারও অবরোধ আর অগ্নিসন্ত্রাস, বাসে আগুন দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রাকে যেমন ব্যহত করা হচ্ছে। স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরা ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারছে না। যেখানে বিএনপির আমলে সাক্ষরতার হার মাত্র ৪৫ ভাগ ছিল, সেটিকে আমরা ৭৬ দশমিক ৬ ভাগে উন্নীত করেছি।

তিনি বলেন, আমি এটুকুই বলব তাদের (বিএনপি) সুমতি হোক। এই ধ্বংসযজ্ঞ-অগ্নিসন্ত্রাস তারা বন্ধ করুক। সেইসঙ্গে দেশবাসীকেও বলব, এই অগ্নিসন্ত্রাস আপনাদেরও প্রতিরোধ করতে হবে। কারণ, সবারই জানমাল আছে।