ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা আবারও অব্যাহত রেখেছে। প্রতিদিনের মতোই সেখানে নতুন করে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি থাকা সত্ত্বেও হামলা বন্ধ হয়নি। ফলে নিহত মানুষের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে, আর ধ্বংসস্তূপের নিচে লাশের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ১৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এছাড়া গাজা ভূখণ্ডে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে আরও ১৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮,৫৭২ জনে। আহত হয়েছেন ১,১২,০৩২ জনের বেশি মানুষ। বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন, যাদের কাছে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতেও পারছেন না।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যকর্মী ও উদ্ধারকর্মীরা গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে আরও ১৫ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন এবং তারাও প্রাণহানির এই সংখ্যার মধ্যে রয়েছেন।

এছাড়া ইসরায়েলি আক্রমণে আরও ৫১ জন আহত হয়েছেন। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১২ হাজার ৩২ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।

প্রসঙ্গত, গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তিন-পর্যায়ের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দি বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে।

মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছিল।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলি হামলার কারণে প্রায় ৮৫% ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এছাড়া, অবরুদ্ধ এই অঞ্চলের ৬০% অবকাঠামো সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলের এই বর্বর আগ্রাসনের কারণে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে তাকে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

গাজায় হতাহত, ধ্বংসযজ্ঞ ও মানবিক সংকট প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়া সত্ত্বেও, এর বাস্তবায়ন হয়নি। বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত এই সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে নিরীহ মানুষের জীবন রক্ষা করা যায় এবং সেখানে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি