গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় নিহতদের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস। এই ঘটনাকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের একটি সিস্টেম্যাটিক উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি এবং এ ঘটনায় যথাযথ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত বছরের ৭ আগস্টের পর থেকে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি হামলায় ৪৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। তবে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস জানিয়েছে, তারা ৮ হাজার ১১৯ জন নিহতের তথ্য যাচাই করেছে। এটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের দেওয়া পরিসংখ্যানের তুলনায় অনেক কম হলেও উভয় পক্ষই বলেছে, ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ১৮ বছরের কম বয়সী মানুষের সংখ্যা ৪৪ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছে ৫-৯ বছর বয়সী শিশুরা। নিহতদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ শিশুটির বয়স ছিল মাত্র একদিন, আর সবচেয়ে বয়স্ক ছিলেন ৯৭ বছরের এক নারী।
প্রতিবেদনটি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে যাচাই করা তথ্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে, যেমন—প্রতিবেশী, পরিবার, স্থানীয় এনজিও, হাসপাতালের রেকর্ড এবং জাতিসংঘের কর্মীরা।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার ভলকার টুর্ক বলেছেন, এটি আন্তর্জাতিক আইনের সিস্টেম্যাটিক লঙ্ঘনের উদাহরণ। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের মৌলিক নীতিগুলো উপেক্ষিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের বিষয়ে একটি ন্যায়সঙ্গত ও নিরপেক্ষ বিচারিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যথাযথ তদন্ত হওয়া অত্যন্ত জরুরি। সেইসাথে, এই সময়ে সমস্ত প্রাসঙ্গিক তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা উচিত।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৮৮ শতাংশ ক্ষেত্রে একই আক্রমণে পাঁচ বা তার বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত বিস্তৃত প্রভাবসম্পন্ন অস্ত্রের ফল হতে পারে।