গাজার উপকূলে প্রথমবারের মতো পৌঁছালো কোনো ত্রাণবাহী জাহাজ।  ‘ওপেন আর্মস’ নামে স্প্যানিশ জাহাজটি ২০০ টন খাদ্যসামগ্রী নিয়ে শুক্রবার বিকেলে গাজা উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছায়।

বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, স্পেনের দাতব্য সংস্থা ওপেন আর্মস, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের যৌথ উদ্যোগে পাঠানো এই ২০০ টন ত্রাণের মধ্যে রয়েছে চাল, ময়দা, বিন, ক্যানজাত সবজি এবং ক্যানজাত মাংস।

জাহাজটি গত মঙ্গলবার সাইপ্রাস থেকে গাজার উদ্দেশে রওয়ানা দেয়। দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন একটি অস্থায়ী জেটি থেকে জাহাজের ত্রাণ বিতরণ করবে। তবে জাহাজটি এখনও তীরে নোঙর করেনি। ফলে ত্রাণ কিভাবে তীরে পৌঁছাবে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নতুন সামুদ্রিক পথে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার প্রচেষ্টা সফল হলে আরও কয়েকটি জাহাজ ত্রাণ নিয়ে গাজার উদ্দেশে রওয়ানা হবে।

তবে দাতব্য সংস্থাগুলো বরাবর বলে আসছে, সমুদ্র ও আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহের পরিকল্পনা গাজা অঞ্চলে বিশাল মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয় মেটাতে যথেষ্ট হবে না।

জাতিসংঘ সতর্ক করে বলছে, গাজা উপত্যকায় দুর্ভিক্ষ প্রায় অনিবার্য এবং শিশুরা অনাহারে মারা যাচ্ছে। কিন্তু মানবিক সংকট লাঘবে স্থলপথে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা গাজায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরাইলি বাহিনী। অন্যদিকে গাজায় স্থলপথে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করাও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ত্রাণ বহরে গুলি ও লুটপাটের ঘটনায় ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম ত্রাণ সহায়তা সাময়িক বন্ধ রেখেছে।

তাই গাজায় বিমান থেকে ত্রাণ ফেলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ। কিন্তু আকাশপথে সাহায্য বিতরণ কঠিন এবং বিপজ্জনক বলে প্রমাণিত হয়েছে। গত সপ্তাহে বিমান থেকে ফেলা ত্রাণের চাপায় অন্তত ৫ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ১১ জন।

স্থল ও আকাশপথের পরিবর্তে জলপথে গাজায় ত্রাণ পাঠানোর চেষ্টা চলছে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সাইপ্রাস থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেওয়া ত্রাণ নিয়ে গাজায় গেলো ওপেন আর্মস নামের জাহাজটি। এখন দেখার বিষয়, জাহাজের ত্রাণ সফলভাবে বিতরণ করা যায় কি না।

এদিকে, গাজায় সমুদ্রপথে ত্রাণ সহায়তা পাঠাতে অস্থায়ী বন্দর নির্মাণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি থেকে অস্থায়ী বন্দর নির্মাণের সরঞ্জাম নিয়ে গাজার উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছে কয়েকটি জাহাজ।